আপন আলোয় উদ্ভাসিত ফারজানা আফরিন

আপন আলোয় উদ্ভাসিত ফারজানা আফরিন
প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ২৩:০০:৪৮
আপন আলোয় উদ্ভাসিত ফারজানা আফরিন
প্রিন্ট অ-অ+
কুমিল্লা শহরে শিক্ষক পরিবারে জন্ম ফারজানা আফরিনের। শৈশব, কৈশোরের বেড়ে ওঠার দিনগুলো কেটেছে এ শহরের ঝাউতলায়। 
 
শিক্ষক মা-বাবার ৩ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট তিনি। বড় দুই ভাই প্রতিষ্ঠিত। একজন ডাক্তার, আরেকজন সামরিক বাহিনীতে কর্মরত। শিক্ষক পরিবারে বেড়ে ওঠা ফারজানা শৈশবেই স্বপ্ন দেখতেন বাবা-মায়ের মতো আদর্শ শিক্ষক হবেন। কর্মজীবনের শুরুটা তার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়েই।
 
গোছালো ও নিয়ম-নীতির মধ্যে বেড়ে ওঠা ফারজানা আফরিন স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবন পেরিয়ে পেশাগত জীবনে টেলিভিশন সাংবাদিকতায় সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। 
 
একাধারে সফল শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিকসহ বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ফারজানা আফরিন। বর্তমানে তিনি একাত্তর টেলিভিশনে প্রতিবেদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
 
এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শব্দশৈলি প্রকাশনী থেকে ‘নারী অধিকার ও সংগ্রাম’ নামে তার লেখা প্রথম বই প্রকাশ হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে তার সাথে আড্ডা জমে রাজধানীর শাহবাগে। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শব্দশৈলি প্রকাশনীতে। 
 
তার বর্ণাঢ্য জীবনের নানান দিক ও মেলায় প্রকাশিত ‘নারী অধিকার ও সংগ্রাম’ বই নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন বিবার্তা২৪.নেটের নিজস্ব প্রতিবেদক উজ্জ্বল এ গমেজের সাথে।
 
আসুন শোনা যাক শিক্ষক, সাংবাদিক ও লেখক ফারজানা আফরিনের জীবনের গল্প :
 
জন্ম ১৯৮৪ সালের ১৬ এপ্রিল। মেষ রাশির জাতিকা ফারজানা আফরিনের এক সময়ে রাশি নিয়ে পড়াশুনার খুব ঝোঁক ছিল। নিজেকে জানা ও বোঝার আগ্রহ থেকে রাশিচক্রের হিসাব-নিকাশ, উৎপত্তি, কারণ ইত্যাদি নিয়ে দেশী-বিদেশি নানান জার্নাল পড়ে ফেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষেই।
 
শৈশব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জানা গেল স্কুল শুরু হয়েছিল তার ‘আওয়ার লেডি অব ফাতেমা গার্লস হাই স্কুল’ নামক মিশনারী স্কুল থেকে। এসএসসি কুমিল্লা ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। এরপর উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে। 
আপন আলোয় উদ্ভাসিত ফারজানা আফরিন
কুমিল্লা বোর্ড থেকে মেধা তালিকায় স্থান করে নেন তিনি। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে।
 
কথা প্রসঙ্গে জানালেন, মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের আগেই জীবনের প্রথম চাকরির আবেদনে সাড়া পেয়ে ইন্টারভিউ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করাটা তাঁর জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ও আনন্দের একটি ঘটনা।
 
জীবনের সাফল্যের অণুপ্রেরণা সম্পর্কে জানালেন, শিক্ষক মা-বাবা কখনোই পরীক্ষায় প্রথম-দ্বিতীয় হবার জন্য চাপ দিতেন না। তবে শুদ্ধ বানান, শুদ্ধ উচ্চারণ ও নির্ভুল ব্যাকরণ শিক্ষার দিকে ছিল বাবা-মায়ের কড়া নজর। 
 
বললেন, এ বিষয়গুলো তার জীবনে ছোট থেকেই বেশ প্রভাব ফেলে। ভালো ফলাফল প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য এরকম- ‘আগে তো নিজেকে নিয়ে বা পড়ালেখা নিয়ে তেমন ভাবতাম না। পড়ালেখা করতাম শুধু বাবা-মা’র ইচ্ছেপূরণ আর প্রচলিত যে সামাজিক ব্যবস্থা তার জন্য। তবে এসএসসির বোর্ড প্লেস আমাকে আরো বেশি দায়িত্বশীল করে তুলল। বুঝলাম আমাকে এইচএসসিতেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। হলোও বেশ ভালো রেজাল্ট।'
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে বিভাগে মাস্টার্স শেষ করে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টেলিভিশন ও ফিল স্টাডিজ বিভাগ থেকে দ্বিতীয় মাস্টার্স করেন ফারজানা আফরিন।
 
প্রিয় পোশাক প্রসঙ্গে জানালেন, শাড়ি তার পছন্দের তালিকার এক ও অদ্বিতীয় প্রিয় পোশাক। সাবলীল ও আত্মবিশ্বাস পান তিনি শাড়িতে। যে কোনো উপলক্ষ পেলে বা সুযোগ পেলেই  শাড়ি পরতে ভালোবাসেন ফারজানা আফরিন। আলাপচারিতায় জানালেন ঢাকা  ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রী থাকাকালে শাড়ি পরেই ক্লাস করতেন।
 
‘আমাকে দেখে অনেক বান্ধবীরাও অনুপ্রাণিত হতো। ওরাও তখন মাঝেমধ্যে ক্লাসে শাড়ি পরে আসতো। আমার তখন খুব ভালো লাগতো। শাড়ি পরার অনুপ্রেরণা পাই আমার মাকে দেখে। শিক্ষক মা ঘরে-বাইরে সবসময়ই শাড়ি পরতেন। মায়ের শাড়ি পরা দেখে দেখে অনেক ছোটবেলাতেই রপ্ত হয়ে যায় সহজে শাড়ি পরার কৌশল। মা বলতেন সালোয়ার-কামিজ তো আমাদের পোশাক না। বাঙালির নারীর পোশাক হলো শাড়ি। সেটিই মাথায় গেঁথে যায়।’
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগে ২য় মাস্টার্স চলাকালে সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন একাত্তর টেলিভিশনে। মূলত নারী অধিকার, সংগ্রাম, নারীর বঞ্চনা, শিশুশ্রম, নারীর বৈষম্যমূলক মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা ও পারিবারিক সহিংসতা, যৌন নিপীড়ন নিয়ে তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন রয়েছে। 
 
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের বুদ্ধিজীবী পরিবার, যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক আদালত নিয়ে বিশেষ কিছু প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে তার। বাংলাদেশে ১৩ জন শহীদ সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী নিয়ে প্রথমবারের মতো টেলিভিশনে প্রচারিত দুই পর্বের বিশেষ প্রতিবেদন ফারজানা আফরিনের করা।
 
আপন আলোয় উদ্ভাসিত ফারজানা আফরিন
বিবার্তা২৪.নেট: কী ধরণের বই পড়তে বেশি পছন্দ করেন?
 
ফারজানা আফরিন:  আমি রবীন্দ্রনাথের একনিষ্ঠ ভক্ত। তার প্রায় সব বই পড়তে ভালো লাগে। গল্প, উপন্যাস, কবিতা, নাটক ইত্যাদি। এছাড়া, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতি ভুষণ বন্দ্যোপধ্যায়ের লেখাও অনেক ভালো লাগে। পড়ার বিষয়ে বলা যায় আমি সর্বভুক। ইদানিং বিভিন্ন গবেষণামূলক বই পড়তে বেশি ভালো লাগছে।
 
বিবার্তা২৪.নেট: এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় আপানার লেখা ‘নারী অধিকার ও সংগ্রাম’ নামে একটি বই বের হচ্ছে। বইটির পেছনের গল্পটা জানতে চাই।
 
ফারজানা আফরিন: এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শব্দশৈলি প্রকাশনী থেকে ‘নারী অধিকার ও সংগ্রাম’ নামে আমার লেখা প্রথম বই প্রকাশ হচ্ছে। প্রথমেই এর সব কৃতিত্ব আমি বইটির প্রকাশককে দিতে চাই। কারণ আমার এ বই প্রকাশের জন্য তিনি অনেকদিন ধরে আমাকে উৎসাহ দিয়ে আসছেন। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত আমার কিছু লেখা তিনি বোধহয় পড়েছিলেন, সেই থেকে বই প্রকাশের প্রস্তাব দেন। 
 
আর আমার লেখালেখি ও রিপোর্টিং দুই ক্ষেত্রেই সবসময় নারী বিষয়ক ইস্যুগুলো প্রাধান্য পেত। মূলত বাংলাদেশের প্রচলিত আইনগুলো সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা আমার সব সময়ের। আইন বিভাগে আমার  মাস্টার্সের থিসিসের বিষয়ও ছিল ‘উপমহাদেশের তুলনামূলক পারিবারিক আইন ও বিশ্লেষণ’। 
 
আমাদের দেশের নারীদের নানান সমস্যা নিয়ে আমার আগ্রহ আগে থেকেই। একজন নারী হিসেবে চলতে-ফিরতে কিছু সমস্যা মোকাবেলা করা এবং সমসাময়িক বিভিন্ন নারী নিপীড়নের ঘটনা, বহু বছর ধরে চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক মনস্তত্ব এসব কারণেই আসলে ঘুরে ফিরে নারী বিষয়ক লেখালেখির শুরু। 
 
আর একটি বিষয় কী, নারী অধিকার বা বঞ্চনা নিয়ে লেখালেখি মানে এই নয় যে পুরুষের বিরুদ্ধে লেখা। আমি আসলে বিদ্যমান কিছু সিস্টেম, ধারণা, পূর্ব ধারণাগত বৈষম্যমূলক আচরণ ইত্যাদি নিয়ে ও এসবের সমাধান নিয়ে লিখতে চেয়েছি। নারীও ক্ষেত্রবিশেষে পুরুষতন্ত্রের বড় হাতিয়ার হিসেবে ভূমিকা পালন করে। 
 
সব মিলিয়ে মনে হলো  নারীদের আইন ও অধিকার নিয়ে একটা বই লেখা দরকার। যেখানে একজন সংক্ষুব্ধ নারী, নির্যাতনের শিকার নারী জানতে পারবে বিভিন্ন সমস্যার আইনগত সমাধান সম্পর্কে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যারা পারিবারিক ও সমসাময়িক আইন সম্পর্কে জানতে চান সে বিষয়ে সহজ সরল ভাষায় বইটি লেখার চেষ্টা করেছি।
 
আমরা প্রতিদিনিই খবরে দেখি নারীরা অত্মহত্যা করছে। এর জন্য রয়েছে অনেক কারণ। একজন নারী কেন আত্মহত্যা করে? কারণ পারিবারিক ও সামাজিকভাবে তাকে এমন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়া হয় যে তখন সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। হয়তো যৌতুকের কারণে, ডিভোর্স দেয়ার কারণে, কুসংস্কার ও গোড়ামির জন্য সে আত্মহত্যা করছে। পরিবার ও সমাজ তাকে ঠেলে দিচ্ছে আত্মহত্যার দিকে। এটা একটা বড় অপরাধ। তাই আমি এটা নিয়ে চিন্তা করলাম যে আত্মহত্যায় বাধ্য করলে বা প্ররোচনা দিলে কী কী শাস্তি রয়েছে এখানে তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
আপন আলোয় উদ্ভাসিত ফারজানা আফরিন
তারপর একজন নারী ডিভোর্সের পরে তার যে প্রাপ্য সেগুলো কীভাবে পেতে পারেন। এই আইনে কী বলা আছে। খ্রিস্টান ‘ল’, হিন্দু ‘ল’ এমনকি মুসলিম ‘ল’তে কী বলা আছে। এটা আমি তুলে ধরেছি। 
 
আরেকটি বিষয় হলো সাইবার ক্রাইম। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। কিন্তু সাইবার ক্রাইম এত বেশি বেড়েছে যে নারীরা নানানভাবে সাইবার ক্রামের শিকার হচ্ছে। আর ইন্টারনেটে সাইবার হ্যারাসমেন্টের শিকার হলে তাদের কী কী শাস্তি রয়েছে। কোথায় গেলে নারীরা এর প্রতিকার পেতে পারেন সে বিষয়গুলো লিখেছি।
 
এছাড়াও পারিবারিক ভরণপোষণের আইন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাচ্চার অভিভাবকত্ব। একটা বাচ্চা হওয়ার পরে ডিভোর্স হয়ে গেল। সেক্ষেত্রে হয় কি শশুরবাড়ির লোকেরা বাচ্চাটি মায়ের কাছ থেকে জোর করে নিয়ে নিতে চান। তখন দেখা যায় সন্তান হারাবার ভয়ে পারিবারিক নির্যাতন সহ্য করার পথ বেছে নেয় মেয়েটি। 
 
কখনো দেখা যায় এক সময় নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয় মেয়েটিকে। এসব নারীদের বিষয়গুলো জানাতে, সচেতন করতেই আমার এ লেখা।
 
তাছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীরা যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণের শিকার হয়। কিন্তু বেশিরভাগ সময় এসবের কোনো বিচার নেই। সামাজের বাস্তব চিত্র নিয়ে আমার লেখাগুলো নারীদের এক ধরনের সচেতনা দেবে বলে আমার বিশ্বাস।
 
কিছু অংশ আছে স্মৃতিচারণা। আমার মা-নানী-দাদীর বিষয়ে। আমার মা ক্যান্সারে মারা গেছেন। মায়ের আলোকিত জীবন নিয়ে স্বল্প পরিসরে কিছু স্মৃতি স্থান পেয়েছে এই বইয়ে।  বইটি পড়ে সার্বিকভাবে একজন নারী যদি তার জীবনে কোনোভাবে উপকৃত হয় তাহলেই আমার এ লেখা সার্থকতা লাভ করবে।
 
বিবার্তা২৪.নেট:  আপনি লেখালেখি করার এত অনুপ্রেরণা পান কোত্থেকে?
 
ফারজানা আফরিন: ছোট থেকেই আমার ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল। লেখার অভ্যাসটা আমার মায়ের মাধ্যমে। মায়ের নির্দেশ ছিল সারাদিনে যা ঘটেছে প্রতিদিন রাতে তা ডায়েরিতে লিখতে হবে। সারাদিন কী ঘটলো, কী দেখলাম, ভালোলাগা-মন্দ লাগা ইত্যাদি। 
 
যদিও বড় হবার পর আমার মনে হয়েছে মূলত কিশোরীবেলার মনঃস্তত্ব বুঝার জন্য প্রতিদিন এ ডায়েরি লেখাতো আমার মা। কিংবা এমনও হতে পারে শুদ্ধ ও পরিণত লেখার হাতেখড়ি দেবার উদ্দেশ্যে এটি করাতেন তিনি। আমারও লাভ হলো। লেখালেখির হাত খুলে গেল। সেই থেকে লেখালেখির শুরু।
 
বিবার্তা২৪.নেট:  আপনার প্রথম প্রকাশিত লেখাটি কী ছিল?
 
ফারজানা আফরিন: খুব সম্ভবত ১৯৯৯ সালের দিকে প্রথম আলোর বন্ধুসভায় আমার একটি ছোট লেখা ছাপা হয়েছিল। কুমিল্লা বন্ধুসভার কার্যক্রম নিয়ে ছিল লেখাটি। কিশোরী বয়সে পত্রিকার পাতায় ছাপার অক্ষরে নিজের নাম ও লেখা দেখে কী যে আনন্দ লেগেছিল...।
 
পরিণত বয়সে ঠিক কোন পত্রিকায় প্রথম লেখা ছাপা হয়েছিল এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না তবে লেখাটি ছিল মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার আবেগ ও বাঙালির চেতনা প্রসঙ্গে।
 
বিবার্তা২৪.নেট:  জীবনে এমন কোনো ঘটনা যেটা আপনাকে এখনও নাড়া দেয়?
আপন আলোয় উদ্ভাসিত ফারজানা আফরিন
 
ফারজানা আফরিন: ২০০৮ এ আমার মায়ের ক্যান্সারে মৃত্যু আমার জন্য সবচাইতে শোকাবহ ঘটনা। আমার মা খুব প্রাণোচ্ছল ও ব্যক্তিত্ববান নারী ছিলেন। চাকরি জীবনে তিনি দুইবার জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকার পুরস্কার পেয়েছিলেন। 
 
প্রতিটি মুহূর্তে আমি অনুভব করি মা থাকলে এটা করতাম...ওটা করতাম...মা থাকলে এরকম না হয়ে ওরকম হতো...। তবে এও ঠিক মায়ের মৃত্যু আমাকে উচ্ছল, নির্ভার এক কিশোরী জীবন থেকে পরিণত, আত্মবিশ্বাসী মানুষে রূপান্তর করেছে।  
 
বিবার্তা২৪.নেট:  প্রিয় শখ?
 
ফারজানা আফরিন: আমি আসলে যখন যে কাজটি করি সেটিই আমার প্রিয় কাজ হয়ে ওঠে। তারপরও বলবো বই পড়া, দেশী-বিদেশি সিনেমা দেখা, নানান ধরণের গান শোনা আমার পছন্দের কাজ। ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালোবাসি। আর পছন্দের মানুষদের সাথে আড্ডায় বসলে সময় যে কীভাবে পার হয়ে যায় টেরই পাই না।
 
বিবার্তা২৪.নেট: অবসরে কী করেন?
 
ফারজানা আফরিন:  আমার অবসর খুব কম থাকে। বেশি সময়ই ব্যস্ত থাকি। তবে বড় বা মাঝারিমানের ছুটি পেলেই বিভিন্ন দেখা-অদেখা জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলি। আর ছোটখাটো অবসরে ফিল্ম দেখি, গান শুনি, রান্নাবান্না করি।
 
বিবার্তা২৪.নেট: আপনার ব্যস্ততার মাঝেও মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য বিবার্তা২৪.নেটের পরিবারের পক্ষ থেকে জানাই কৃতজ্ঞতাপূর্ণ ধন্যবাদ।
 
ফারজানা আফরিন: আমার জীবনের গল্প আপনাদের নিউজ পোর্টালে প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
 
 
বিবার্তা/উজ্জ্বল/কাফী
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com