কেউ কেউ মনে করেন, খাওয়ার পরে ঠাণ্ডা জল খেলে হজম ভাল হয়। কেউ আবার মনে করেন উল্টোটা। কারও ধারণা, স্বাভাবিক তাপমাত্রা সম্পন্ন জলই খাওয়ার পরে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর। কারও মত, খাওয়া-দাওয়ার পরে ফ্রিজের জল খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত। কিন্তু এতসব মতামতের মধ্যে কোনটি ঠিক? কোনটি চিকিৎসাবিজ্ঞানসম্মত? আসুন, জেনে নিই।
আয়ুর্বেদশাস্ত্র মনে করে, খাওয়ার সময় বা পরে জল না খাওয়াই উচিৎ। কারণ আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে, ভুক্ত খাদ্য হজম করে শরীরের অভ্যন্তরস্থ আগুন। জল খেলে সেই আগুন প্রশমিত হয়। ফলে খাদ্য হজম হতে বাধা সৃষ্টি হয়। এই আয়ুর্বেদ মত অবশ্য আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান সমর্থন করে না। বরং ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লিমেন্টারি এ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ মে়ডিসিন মনে করছে, খাওয়ার সময় জল খাওয়ার অভ্যাস শরীরের কোনও ক্ষতি তো করেই না, বরং এই অভ্যাসের ফলে হজম হয় সহজে, এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
কিন্তু প্রশ্ন হল, খাওয়ার পরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা সম্পন্ন জল খাবেন, নাকি ফ্রিজের জল? ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে কম তাপমাত্রাসম্পন্ন জল বা ফ্রিজের জল খেলে সামান্য বেশি ক্যালোরি পোড়ার সম্ভাবনা থাকে। সোজা কথায়, ফ্রিজের জল খেলে শরীরে চর্বি জমার সম্ভাবনা একটু কমে। তাছা়ড়া ঠাণ্ডা জল পরিপাক তন্ত্রে অবস্থান করে অল্প সময়। অর্থাৎ গরম কালে, যখন প্রচুর ঘাম ঝরে শরীর থেকে, তখন ঠাণ্ডা জল খাওয়াই ভাল, কারণ তাতে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ সহজে হয়।
ডাক্তাররা বলছেন, সারাদিনে একজন সুস্থ পুরুষের ১৫ গ্লাস এবং একজন সুস্থ মহিলার ১১ গ্লাস জল খাওয়া উচিৎ। কাজেই যদি দু’বেলা খেয়ে ওঠার পর দু’গ্লাস করে জল খেয়ে নিতে পারেন তাহলে আপনার সারাদিনের জলের প্রয়োজন অনেকটা সেখানেই মিটে যায়। অতএব, খেয়ে উঠে জল খাওয়ার ফলে শরীরের কোনও ক্ষতি তো হয়ই না, বরং এতে উপকারই হয় শরীরের।
বিবার্তা/জিয়া