পুলিশি হেফাজতে দুর্ধর্ষ আসামির হাতে মোবাইল!

পুলিশি হেফাজতে দুর্ধর্ষ আসামির হাতে মোবাইল!
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৪:৩৪:৪৪
পুলিশি হেফাজতে দুর্ধর্ষ আসামির হাতে মোবাইল!
রাজশাহী ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+
দুর্ধর্ষ আসামি। মামলার সংখ্যা  ডজনখানেক। পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে আহত হয়ে বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রয়েছেন ‘পুলিশ পাহারায়’। আর এ পুলিশি পাহারার ভেতরেও মোবাইল ফোনে কথা বলছেন দিব্যি। শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের দৃশ্য এটি।
 
ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর কক্ষের ৫৫ নম্বর বেডে শুয়ে যে ব্যক্তি মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন, তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী কানু ওরফে সোনাদ্দী ওরফে কান্ডু মিয়া (২৬)। গত শনিবার রাতে নওগাঁর নিয়ামতপুরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তিনি পুলিশের গুলিতে আহত হন। এ ঘটনায় নিয়ামতপুর থানায় তার নামে মামলা করা হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে শনিবার রাত ৩টার দিকে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
 
শুক্রবার বেলা ১১টায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কান্ডু মিয়াকে দেখে রাখার জন্য দায়িত্বে রয়েছেন রাজপাড়া থানার দুজন পুলিশ সদস্য। তাদের মধ্যে একজন মাহমুদুল ইসলাম ওয়ার্ডের সামনে নার্সেস ডিউটি চেম্বারে বসে পড়ছেন সংবাদপত্র। আরেক পুলিশ সদস্য আবদুল কাইয়ুম কথা বলছেন মোবাইল ফোনে। আর পুলিশ সদস্যদের এ ধরনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়েছেন কান্ডু মিয়াও। তিনি ওয়ার্ডের ভেতরে বেডে শুয়ে মোবাইল ফোনে ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তার হাতে হ্যান্ডকাপও লাগানো ছিল না।
পুলিশি হেফাজতে দুর্ধর্ষ আসামির হাতে মোবাইল!
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ কনস্টেবল মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের অগোচরে সে মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ নিয়েছে। বিষয়টি জানার পর তার কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে তার স্ত্রী ববি বেগমকে দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে আমরা সচেতন রয়েছি।’
 
আসামির হাতে হ্যান্ডক্যাপ না থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে কনস্টেবল আবদুল কাইয়ুম বলেন, কান্ডুর বাম পায়ের গোড়ালির নিচের অংশ অস্ত্রোপচার করে কেটে ফেলা হয়েছে। পালানোর মতো শারীরিক সক্ষমতা তার নেই। এ জন্য মানবিক দিক বিবেচনা করে তার হাতে হ্যান্ডকাপ লাগানো হয়নি। তবে  আসামিকে কোনো বাড়তি সুবিধা দেয়া হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি।
 
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, পুলিশ হেফাজতে কোনো আসামিই মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারবেন না। তবে হাসপাতালের বিষয়টি তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হবে। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাত ১১টার দিকে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার চান্দইল ইটভাটার কাছে পুলিশের সঙ্গে ডাকাতদলের গুলি বিনিময় হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসী কান্ডু মিয়া ও একজন উপপরিদর্শক (এসআই) আহত হন। সেখান থেকে পুলিশ দুই ডাকাতকেও আটক করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ককটেল, করাত ও রশিসহ ডাকাতি করার নানা সরঞ্জাম।
 
সন্ত্রাসী কান্ডু মিয়ার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আড়গাড়াহাট পলাশবাড়ি এলাকায়। তার বাবার নাম কসিম উদ্দিন। হাসপাতালে কান্ডু মিয়া নিজেই জানিয়েছেন, বিভিন্ন থানায় তার নামে মামলা আছে ডজনখানেক।
 
বিবার্তা/রিমন/জিয়া 
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com