যা দেখে কুমারী পূজার ‘কুমারী’ বাছাই হয়

যা দেখে কুমারী পূজার ‘কুমারী’ বাছাই হয়
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৪৫:৪৪
যা দেখে কুমারী পূজার ‘কুমারী’ বাছাই হয়
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সনাতন ধর্মানুযায়ী কুমারী পূজা ছাড়া দুর্গাপূজার পরিপূর্ণ ফল লাভ হয় না। অনেকে বলেন, মৃন্ময়ী রূপে উমার আরাধনার সঙ্গে দেবীজ্ঞানে কুমারী বন্দনা না করলে পূজার সার্থকতা থাকে না। তাই প্রতিবছর প্রথা মেনে কুমারী পূজা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। কিন্তু কীভাবে বাছাই করা হয় কুমারী-দেবী? কী বলছে শাস্ত্র?

এ বিষয়ে বিশিষ্ট সংস্কৃতজ্ঞ তথা পশ্চিবঙ্গ বৈদিক অ্যাকাডেমির প্রধান নবকুমার ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘সকল কন্যাই দেবীস্বরূপা। তবে পূজার জন্য কুমারী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশ রয়েছে শাস্ত্রে।’  

এই বিষয়ে নবকুমার ভট্টাচার্য তাঁর ‘দুর্গাপূজার জোগাড়’ গ্রন্থে লেখেন, ‘তন্ত্র অনুসারে এক থেকে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত কুমারীকে পূজার কথা বলা হয়েছে। সেখানে বয়স অনুসারে কুমারীর নামকরণও করা হয়েছে। কিন্তু শাস্ত্র অনুসারে ১০ বছর বয়ষী কন্যাকেই কুমারী পূজা করা উচিত বলে স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।’

কুমারীর আকৃতি, প্রকৃতি সম্পর্কেও শাস্ত্রে নির্দেশ রয়েছে বলে ওই গ্রন্থে জানান নবকুমার। তাঁর বক্তব্য, ‘কুমারীর আকৃতি হবে সুন্দর, সুলক্ষণা এবং প্রকৃতি হবে শোভনা। দেবীভাগবতে আবার বলা হয়েছে, এক বছর বয়সের কুমারী পূজার যোগ্য নয়। দুই বছর থেকে ১০ বছর বয়স্ক বালিকা কুমারী হবে।’

বিভিন্ন বয়সের কুমারী মেয়ের জন্য আলাদা আলাদা নামও রয়েছে শাস্ত্রে। এবং তাকে পূজা করলে কী ফল পাওয়া যাবে তাও বলা রয়েছে। যেমন-

>> দুই বছর বয়সের কন্যার নাম সরস্বতী। পূজার ফল দুঃখ, দারিদ্র্য ও শত্রু নাশ এবং ধন ও আয়ু বৃদ্ধি।

>> তিন বছর বয়সের কন্যার নাম ত্রিধামূর্তি। পূজার ফল আয়ু বৃদ্ধি, ধনাগম ও বংশবৃদ্ধি।


>> চার বছর বয়সের কন্যার নাম কালিকা। পূজার ফল বিদ্যা, বিজয়, রাজ্য লাভ।

>> পাঁচ বছর বয়সের কন্যার নাম সুভগা। ফল রোগনাশ।

>> ছয় বছর বয়সের কন্যার নাম উমা। ফল শত্রুনাশ।

>> সাত বছর বয়সের কন্যার নাম মালিনী। পূজায় ধনৈশ্বর্য লাভ হয়।

>> আট বছর বয়সের কন্যার নাম কুম্ভিকা। পূজা করলে শত্রুদের মোহিত করা যায়।  

>> নয় বছর বয়সের কন্যার নাম কালসন্দর্ভা। পূজা করলে দারিদ্র্য ও শত্রু বিনাশ হয়।

>> ১০ বছর বয়সের কন্যার নাম অপরাজিতা। পূজায় অভীষ্ট সিদ্ধ হয়।

নবকুমার ভট্টাচার্য তাঁর বইতে জানান কুমারী পূজায় যে ধ্যান করতে হয় সেখানে বলা হয়- ‘মা তুমি ত্রৈলোক্যসুন্দরী, কিন্তু আজ তুমি কালিকাস্বরূপে আমার সম্মুখে উপস্থিত। তুমি জ্ঞানরূপিণী, হাস্যময়ী, মঙ্গলদায়িনী।’

আর কুমারী পূজার যে প্রণাম মন্ত্র রয়েছে তার অর্থ- ‘মা, তুমি প্রসন্ন হলে আমাকে সৌভাগ্য দান করতে পারো। তুমি সকল প্রকারের সিদ্ধি আমাকে দান কর। তুমি স্বর্ণ, রৌপ্য, প্রবাল কত রকমের অলঙ্কারে অলঙ্কৃত হয়েছ। তুমিই সরস্বতী। আমি তোমাকে প্রণাম করি।’

বিবার্তা/নিশি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com