যশোরের মণিরামপুরে ঈদের আগে বেতন-বোনাস পেলেন না প্যানেলভুক্ত সদ্য নিয়োগ পাওয়া ১২৫জন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিস বেতন ছাড় করলেও হিসাব রক্ষণ অফিস কাগজ ক্রটির দোহায় দিয়ে বেতন ছাড় করেনি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে ওই দু’অফিস একে অপরকে দোষারোপ করছে। আর ঈদের আগে বেতন না পেয়ে এদের অনেকের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে বেসরকারি রেজিস্ট্রিকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (বর্তমান সরকারি) শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মেধাক্রম অনুসারে প্যানেলভুক্ত করা হয়। এরপর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু সরকার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু করলে ওই নিয়োগ স্থগিত হয়ে যায়।
পরবর্তীতে প্যানেলভুক্ত শিক্ষকরা উচ্চ আদালতে রিট করে নিয়োগ ফিরে পান। সে অনুযায়ী এই উপজেলায় চলতি বছরের ২৮ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ কার্যক্রম চলে। এভাবে মণিরামপুর উপজেলায় ১২৭ প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। এদেরমধ্যে একজন মেডিকেল ছুটি নেন এবং অপর একজন সাময়িক বরখাস্ত আছেন। কিন্তু শত চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে নিয়োগ পেয়ে নিয়মিত স্কুল করেও ঈদের আগে বেতন-বোনাস না পেয়ে হতাশায় পড়েছেন তারা। অনেকের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, প্রতিষ্ঠান বাড়ি থেকে দূর হওয়ায় প্রতিদিন ২০০ টাকা যাতায়াত খরচ করে নিয়মিত স্কুল করেছেন। ঈদ আগত তাই পরিবারের সদস্যরা আশায় বুক বেঁধে ছিলেন নতুন চাকরির প্রথম বেতন পেয়ে তাদের জন্য কিছু করা হবে। কিন্তু সে আশা আর পূরণ হলো না।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার সরদার বলেন, সব বিধি মেনেই তাদের বেতন-বোনাসের বিল সংশ্লিষ্ট হিসাব রক্ষণ অফিসে পাঠানো হয়েছিলো। কিন্তু নিয়োগপ্রাপ্তদের কাগজ-পত্রের ত্রুটির দোহায় দিয়ে ওই অফিসের বিরুদ্ধে বিল ছাড় না করার অভিযোগ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম তাদের গাফিলতি না থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বেতন নির্ধারণ (ফিক্সেশন) অনুমোদন ছাড়াই বেতন-বোনাসের বিল দাখিল করা হয়। কিন্তু বিষয়টি সরকারি বিধি মোতাবেক না হওয়ায় ও সময় স্বল্পতার কারণে তা ছাড় করা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস অধিকারী বলেন, যশোর জেলার সব উপজেলায় প্যানেলভুক্ত নিয়োগপ্রাপ্তদের একইভাবে বেতন-বোনাস ছাড় করা হলেও এখানে বেতন বোনাস ছাড় না করাটা দুঃখজনক।
বিবার্তা/তুহিন/রয়েল