নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকার পর তার প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের দেয়া প্রতিক্রিয়ায় আমি স্তম্ভিত। তার বক্তব্যের দুটি দিক আমার মনে সন্দেহের উদ্রেক করেছে।
প্রথমত, তিনি বলেছেন “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, বিশেষ উদ্দেশ্যে এই বিচার করা হচ্ছে। একের পর এক ফাঁসি দেয়া হচ্ছে বিশেষ উদ্দেশ্যে।” তাহলে কি তিনি বলতে চাচ্ছেন আমাদের বিচারবিভাগ বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে কাজ করে যাচ্ছেন?
আমরা জানি প্রত্যেকটি রায় আইনের সব নিয়ম-নীতি অনুসৃত হয়ে, একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগের মাধ্যমে পাওয়া। তার এই উক্তি বিচার বিভাগ এবং মাননীয় বিচারপতিদের স্বাধীনতা ও নিরেপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং তাদের কে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে লিপ্ত বলে ইঙ্গিত করে।
একজন সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে তিনি কিভাবে এই রকম হেয়ালিপূর্ণ মন্তব্য করলেন তা আমার বোধগম্য নয়।
দ্বিতীয়ত, তিনি বলেছেন “দেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধের বিচারের ব্যাপারে কী মনোভাব প্রকাশ করে তা গোয়েন্দা বাহিনীর মাধ্যমে খবর নিয়েও দেখতে বলেছেন তিনি।”
আমরা জানি তিনি একটি রাজনৈতিক দলকে প্রতিনিধিত্ব করে। তিনি হয়ত ভুলে গেছেন তার রাজনৈতিক দলের বাইরেও বিশাল একটি জনগোষ্ঠী আছে যারা যুদ্ধাপরাধীর বিচার চায় বলে এদেশে এখনও বিচারের দাবিতে গণজাগরণ হয়।
তার উক্তির সব চেয়ে সন্দেজনক দিকটি হচ্ছে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন রাষ্ট্রের আরও এক স্পর্শকাতর সংস্থাকে জড়িয়ে। জনগণের মতামত জানার জন্য গোয়েন্দা বাহিনী নাম উল্লেখ করা কি গোয়েন্দা বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা কিনা তা ভেবে দেখার সময় এসেছে।
তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবার।
তুরিন আফরোজের ফেসবুক থেকে