এটিএম কার্ড জালিয়াতি থেকে কীভাবে রক্ষা?

এটিএম কার্ড জালিয়াতি থেকে কীভাবে রক্ষা?
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০১:৩৯:৩৯
এটিএম কার্ড জালিয়াতি থেকে কীভাবে রক্ষা?
লিউজ রেসার :
প্রিন্ট অ-অ+
‘এটিএম কার্ড জালিয়াতি : কীভাবে হয় এবং কীভাবে এটা থেকে রক্ষা পাবেন’ শিরোনামে ‘লিউজ রেসার’ নামের একজন হ্যাকারের জবানবন্দি এখানে প্রকাশ করা হলো...
 
সাম্প্রতিককালে এটিএম কার্ড জালিয়াতি আশংকাজনকভাবে বেড়ে গেছে। দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংকের অনেক বুথ থেকে ইতিমধ্যেই লুট হয়ে গেছে কয়েক লাখ টাকা। ইউসিবি, সিটি, এমটিবি এবং ইস্টার্ন ব্যাংকের কয়েক লাখ টাকা লুট হলেও সর্বশেষ খবর অনুযায়ী কেবল ইস্টার্ন ব্যাংক তাদের ২৪জন গ্রাহককে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে।
 
পুলিশের তথ্যানুযায়ী, ইতিমধ্যেই প্রথমে পাঁচজন এবং পরে তিনজন বিদেশিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করেছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একজন তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমার আজকের এই লেখা।
 
আমি বিশ্বাস করি, সাইবার অপরাধগুলো কীভাবে হয় তা জানতে পারলে, আপনি নিজেই এসব থেকে কীভাবে নিরাপদ থাকবেন তা বুঝতে পারবেন। মূলত এই উদ্দেশ্যেই এটিএম স্কিমার রা কীভাবে স্কিমিং করে তার বর্ণনা এবং এদের হাত থেকে বাঁচার উপায় সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করব, এই লেখা আপনাকে নিরাপদ ব্যাংকিংকে উৎসাহিত করবে।
 
এটিএম স্কিমিং কী?
এটিএম স্কিমিং (এটিএম কার্ড হ্যাকিং) হচ্ছে এমন একটি প্রদ্ধতি-যা ব্যবহার করে সাইবার অপরাধীরা আপনার এটিএম কার্ডের তথ্য ব্যবহার করে আপনার ব্যাংক একাউন্টের নিয়ন্ত্রন নিতে পারে। আর যেসব অপরাধীরা এর সাথে জড়িত তাদের স্কিমার বলে।
 
কীভাবে এটিএম স্কিমিং হয়?
স্কিমার রা সাধারণত স্কিমিং এর তিনটি ধাপে তিনটি জিনিস ব্যবহার করে স্কিমিং করে।
 
১. স্কিমিং ডিভাইস: বুথের যে স্লটে আপনি এটিএম কার্ড রাখেন সেখানে স্কিমার তাদের স্কিমিং ডিভাইস সেট করে রাখে। এই ডিভাইস অতি ক্ষুদ্র এবং তার বিহীনভাবেই স্কিমারকে তথ্য পাঠাতে সক্ষম। স্কিমার বুথের আশপাশেই অবস্থান করে এবং তার কাছে অন্য একটি রিসিভার থাকে যা স্কিমার ডিভাইসের ডাটা গ্রহন করতে সক্ষম। ভিকটিম যখন স্লটে কার্ড পাণ্চ করবে তখন স্লটে আগে থেকে সংযুক্ত করা ছোট ডিভাইসটি কার্ডের ম্যাগনেটিক কার্ডের সমস্ত তথ্য চুরি করে স্কিমারের কাছে পাঠায়।
 
২. পিনকোড চুরি: স্কিমার আপনার কার্ডে সংরক্ষিত সমস্ত তথ্য পেয়ে গেছে। কিন্ত আপনার ব্যাংক একাউন্টের পূর্ণ নিয়ন্ত্রন নিতে আপনার পিনকোডটাও যে স্কিমারের প্রয়োজন-এজন্য স্কিমার কি-প্যাডের দিকে তাক করে একটা গোপন ক্যামেরা বুথে বসিয়ে দেয়। কিংবা কি-প্যাডের উপর ফেইক কি-প্যাড বসানো থাকতে পারে যা আপনি কোন কোন কি-চেপেছেন সেই তথ্য স্কিমারের কাছে পাঠাবে।
 
৩. ভূয়া এটিএম কার্ড: এবার স্কিমাররা স্কিমিং ডিভাইস থেকে পাওয়া ডাটা দিয়ে ভূয়া স্কিমিং কার্ড বানাবে। ব্যস, কাজ শেষ। এবার স্কিমার এই ভূয়া ক্রেডিট কার্ড এবং পিন ব্যবহার করে আপনার একাউন্টের পূর্ণ নিয়ন্ত্রন নিতে সক্ষম।
 
পরামর্শ: 
ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রতি-
* প্রতিটি বুথে এন্টি স্কিমিং ডিভাইস স্থাপন করুন। এটি বুথে স্কিমিং ডিভাইস-এর উপস্থিতি শনাক্ত এবং দ্রুত ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে।
 
এটিএম কার্ড ব্যবহারকারীদের প্রতি- 
* বুথের আশপাশটা নজরে রাখুন। খেয়াল রাখুন কি-বোর্ডের দিকে তাক করে কোন ক্যামেরা আছে কি না। 
* স্লটে কার্ড পান্চ করার সময় খেয়াল রাখুন। স্বাভাবিকের চেয়ে জোরে চাপ দিয়ে স্লটে ডুকানো লাগলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুন। 
* কি-প্যাডটা কি অস্বাভাবিক উঁচু? খেয়াল রাখুন। 
* পিনকোড টাইপ করার সময় হাত ঢেকে রাখুন। 
* কার্ড স্লট এরিয়ায় সন্দেহজনক কিছু সংযুক্ত কিনা খেয়াল রাখুন।
 
এরকম সন্দেহজনক কিছু দেখলে দ্রুত ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবং আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করুন। সতর্ক থাকুন। নিরাপদে লেনদেন করুন। Email : [email protected]
 
 
বিবার্তা/এম হায়দার
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com