হাইকোর্টের রায়কে বেআইনী ও বৈষম্যমূলক আখ্যায়িত করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক দাবিকৃত করফাঁকির অর্থ বাবদ ১,৯২৪ কোটি টাকা রাজস্ব মওকুফে ব্রিটিশ হাই কমিশনারের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার প্রমাণ মিলেছে বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)এর বিরুদ্ধে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার মিস এলিসন ব্লেকের সাথে সাক্ষাত করে বিএটিবি’র একটি প্রতিনিধি দল। এসময় তারা বিএটিবি’র পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনিম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে প্রদান করে। চিঠিতে বকেয়া করের বিষয়টি সমাধানে ব্রিটিশ হাই কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
চিঠিতে বিএটিবিকে বাংলাদেশে পরিচালিত ব্রিটেনের অন্যতম বৃহৎ একটি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে বলা হয়, দাবিকৃত অর্থ পরিশোধ করতে বাধ্য করা হলে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়বে প্রতিষ্ঠানটি।
চিঠিতে বাংলাদেশ সরকারকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে বলা হয়,এ বিষয়ে সুবিচার পেতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার চিন্তাও করছে বিএটিবি।
উল্লেখ্য, ২০০৯-১০ থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছরে মধ্যম মূল্যস্তরের পাইলট ও ব্রিস্টল ব্রান্ড সিগারেটকে নিম্ন মূল্যস্তরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে রাজস্ব বাবদ এ অর্থ ফাঁকি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি নজরে এলে ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর তিনটি দাবিনামায় উক্ত রাজস্ব পরিশোধের নির্দেশ দেয় এনবিআর। বিএটিবি ওই দাবিনামাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৫ সালে রিট পিটিশন দায়ের করে। সর্বশেষ হাইকোর্ট বিভাগ গত ৬ মার্চ তারিখের এক রায়ে এ অর্থ সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে জমা প্রদানের নির্দেশ দেন।
তামাকবিরোধীরা বলছে, সিগারেটে করারোপে ৪ স্তরবিশিষ্ট মূল্যস্তর প্রথা চালু থাকায় বিএটিবি কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ পেয়েছে। তাদের দাবি, আগামীতে একাধিক স্তরবিশিষ্ট মূল্যস্তর প্রথা তুলে দিয়ে একক মূল্যস্তর প্রথা চালু করতে হবে। সূত্র : টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রি ওয়াচ বিডি টিম @ প্রজ্ঞা
বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী