কেন দেবদেবীর বাহন বিভিন্ন প্রাণী?

কেন দেবদেবীর বাহন বিভিন্ন প্রাণী?
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০১৬, ১১:৩৩:৫২
কেন দেবদেবীর বাহন বিভিন্ন প্রাণী?
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+
হিন্দুদের পূজা পদ্ধতি ও অনুশাসনে প্রকৃতি ও জীবের ব্যবহার সর্বাধিক যা তাদের পূর্বপুরুষ ঋষিদের বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ বলা যায়। আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কার এক দিনে হয়নি বিজ্ঞানের আবিষ্কার ধারাবাহিকতার ফল। পৃথিবীর প্রথম মানুষ প্রথম বিজ্ঞানী ছিলেন। তার জ্ঞান ২য় জনে পেয়েছেন, এই ভাবে আজকের আমি ও আপনি।
 
হিন্দুদের প্রতিটি দেবতার এক একটি বাহন রয়েছে। মূলত তাদের পুরাণ গুলিতেই এর ব্যাখ্যা রয়েছে। এখন কেন দেব দেবীরা এই সব বাহনকে ধারণ করেছেন? এর উত্তরে বলা যায় আধুনিক ইকোসিস্টেমের যে ধারণা সেই ধারণা আধুনিক হলেও অনেক আগে থেকেই এর চর্চা সনাতন ধর্মে ছিল।
 
দেব দেবীরা বাহন ধারণ করে বুঝিয়েছেন যে, প্রতিটা প্রাণীর অস্তিত্ব বর্তমান না থাকলে সৃষ্টির নিয়ম লঙ্ঘিত হবে। মাংসভোজী প্রাণীদের মেরে ফেললে তৃণভোজী প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং তৃণ সংকটে বনাঞ্চল ধ্বংস হয়ে যাবে। এই কারণেই বাঘ ও সিংহ ধারণ করেছেন দেবীরা। দেবীর বাহন বলে সিংহ ও বাঘকে হত্যা করা যাবে না। সিংহ ও বাঘকে শক্তির প্রতীক হিসাবেও দেখা হয়। 
 
আবার দেখুন ইঁদুর, গরু, প্যাঁচা, ঈগল, সাপ, ময়ূর, হাঁস, হাতিসহ বিভিন্ন প্রাণীকে বাহন হিসাবে ধারণ করেছেন বিভিন্ন দেবতারা। আবার শ্রী রামের কথা মনে করলেই বানর ও হনুমানের কথা মনে পড়ে। প্রজাপতির বিশাল স্থান আছে সনাতন দর্শনে।
 
শুধু ইঁদুরের কথাই যদি বলি তবে বলতে হয়, মানবের কোন উপকারে এই প্রাণীটি তেমন কোন ভূমিকা রাখে না। তাহলে কেন ইঁদুরকে আমরা রক্ষা করবো? রক্ষা করবো এই কারণেই যে, ইঁদুরকে খেয়ে বেঁচে থাকে এমন প্রাণী মানব ও প্রকৃতির উপকারে আসে। তাই সব প্রাণীর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এবং রয়েছে বলেই এই প্রাণী গুলিকে দেবতাদের বাহন করে রক্ষা করার জন্য বলা হচ্ছে।
 
ইকোসিস্টেমে এক প্রাণী অন্য প্রাণীর উপর নির্ভরশীল। খাদ্য চেইনের একটি বিচ্ছিন্ন হলে অনেক গুলি প্রাণী অস্তিত্ব হুমকিতে পরে। যেমন ধরুন গরুকে রক্ষা করতে যে টিকা দেওয়া হয় সেটা শকুনের জন্য বিষ। টিকা গ্রহণকারী গরু মারা গেলে ঐ মৃত গরুকে শকুন খেলে শকুন মারা যায়। গরু মারা গেলে সেই গরুকে এখন নদীতে বা খালে ভাসিয়ে দেওয়া হয়, এতে জল দূষিত হয়। কিন্তু শকুন মৃত প্রাণীগুলিকে খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে প্রকৃতি দূষণ থেকে রক্ষা করতো।
 
সুতরাং বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, আমাদের পৌরাণিক নিয়ম কানুন গুলি কালজয়ী ও বৈজ্ঞানিক।ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করুন।সূত্র: এবেলা।
 
বিবার্তা/জিয়া
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com