দলীয় তহবিল মোটা করতে চান এরশাদ

দলীয় তহবিল মোটা করতে চান এরশাদ
প্রকাশ : ২০ মে ২০১৬, ১৪:৩৯:২৬
দলীয় তহবিল মোটা করতে চান এরশাদ
জাহিদ হোসেন বিপ্লব
প্রিন্ট অ-অ+
১৪ মে জাপার অষ্টম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার এক সপ্তাহে না পেরুতেই নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দলটি। তবে নতুন কমিটি গঠনের আগেই পার্টির দলীয় তহবিল শক্ত করতে চায় দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। 
 
আগের সব বকেয়া পরিশোধ সাপেক্ষে নতুন কমিটিতে অন্তুর্ভুক্ত হতে হবে এমন শর্ত জুড়ে দেওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতারা বিশেষ করে দীর্ঘদিন যারা দলীয় তহবিলে নিয়মিত চাঁদা দেননি, তারাই বেশ বিপাকে পড়েছেন।
 
৪১ জন প্রেসিডিয়াম, ৪১ জন ভাইস-চেয়ারম্যান, ৩৪ উপদেষ্টা, ১৬ যুগ্ম মহাসচিব, ৩৬ সাংগঠনিক সম্পাদক, ২৩ বিভাগীয় সম্পাদক, ২৩ যুগ্ম সম্পাদক এবং ৯৯ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে জাপার এই কেন্দ্রীয় কমিটি। মোট সদস্য হবে ২৯৯।
 
ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান, কো-চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব সম্মেলনের দিন ডেলিগেটের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
 
নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে ১৮ মে জাপার বনানী কার্যালয় থেকে ফরম বিতরণ শুরু করেছে দলটি। আগামী ২৪ মে পর্যন্ত এই ফরম সংগ্রহ এবং জমা দেওয়া যাবে। এ ফরমের মূল্য ধরা হয়েছে এক হাজার টাকা। দলটি আশা করছেন, হাজারের বেশি ফরম বিক্রি হবে।
 
দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের আগে থেকেই মাসিক ভিত্তিতে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা নির্ধারণ করা রয়েছে। প্রেসিডিয়াম এবং সংসদ সদস্য তিন হাজার টাকা, উপদেষ্টা দুই হাজার পাঁচশ, ভাইস-চেয়ারম্যান দুই হাজার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এক হাজার এবং সদস্যদের পাঁচশ টাকা হারে দলীয় ফান্ডে জমা দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। তবে জাপা চেয়ারম্যান একাধিকবার তাগাদা দিলেও দলের অধিকাংশ নেতা নিয়মিত এই টাকা পরিশোধ করেন না। এরশাদ নিজেই বিভিন্ন সভাসমাবেশে আক্ষেপ করে এ ব্যাপারে অভিযোগও করেছেন।
 
জানা গেছে, এমন অনেক নেতা আছেন ২০১০ সালের জাপার সম্মেলনের পর এখনও কোনো টাকাই পরিশোধ করেননি। সে হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ সদস্যের কাছে ৫০ হাজারের বেশি টাকা বকেয়া রয়েছে। সূত্র মতে, দলের অনেক প্রেসিডিয়াম সদস্যও নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ করেন না। এমনও প্রেসিডিয়াম সদস্য আছেন যার বকেয়ার পরিমাণ আড়াই লাখেরও বেশি।
 
জাতীয় পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য জানান, তার বকেয়া ৭৮ হাজার টাকা। এমতাবস্থায় এই টাকা পরিশোধ করে নতুন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া কঠিন। তিনি আরো জানান, দলের ৮০ ভাগ কেন্দ্রীয় নেতাই চাঁদা পরিশোধ করেননি।
 
দলের  কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নেন এমন এক সাবেক ছাত্রনেতা এবং জাপা যুগ্ম মহাসচিব নাম না বলার শর্তে বিবার্তাকে বলেন, ‘দলে চাঁদা দেওয়া নিঃসন্দেহে ভাল উদ্যোগ। কিন্তু আমরা যারা দলের প্রতিটি সভাসমাবেশে অংশ নিচ্ছি এবং যৌবনের শুরু থেকে দলের পিছনে কয়েক যুগ পরিশ্রম করেছি, এরশাদ মুক্তি আন্দোলনে কারাবরণ করেছি, তাদেরকে বকেয়া প্রশ্নে দলের হাইকমান্ড ছাড় দিবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।’
 
বকেয়া পরিশোধের বিনিময়ে নতুন কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে জাপা কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিবার্তাকে বলেন, জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। এতো বড় সংগঠন একার পক্ষে চালানো অসম্ভব। দশের লাঠি একার বোঝা। সবাই যদি দল চালাতে আর্থিক এবং মেধা দিয়ে সহযোগিতা করেন, তাহলে দল যেমন শক্তিশালী হবে তেমনি দলের প্রতি সেই নেতার ভালবাসা বা আকর্ষণও বাড়বে।’
 
জিএম কাদের আক্ষেপ করে বলেন, দলের যে সকল নেতা আর্থিকভাবে দুর্বল তাদের না হয় দলীয় নির্ধারিত টাকা দিতে কষ্ট হয়; কিন্তু যারা সক্ষম এবং নিজ ব্যবসা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত, তারা যখন দলের নির্ধারিত টাকা দিতে গড়িমষি করেন, তখন দুঃখ লাগে।
 
দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বলেন, ‘দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতারা নির্দিষ্ট হারে চাঁদা দিয়ে দল পরিচালনা করেন। আমাদের দল অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে অনেক বেশি সুশৃঙ্খল। আমাদের নেতারা দল এবং নেতা এরশাদের প্রতি অবিচল। অনেকে সময় ও সুযোগের কারণে দলের বকেয়া দিতে পারেননি। কিন্তু এখন নেতারা সেই বকেয়া পরিশোধ করে দলের নিজস্ব তহবিল শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখছেন। সে জন্য আমি সে সব নেতার প্রতি কৃতজ্ঞ।’
 
বিবার্তা/বিপ্লব/জিয়া
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com