এক নেতার এক পদ বাস্তবায়নে অনড় খালেদা

এক নেতার এক পদ বাস্তবায়নে অনড় খালেদা
প্রকাশ : ২১ জুন ২০১৬, ১৮:৩০:১০
এক নেতার এক পদ বাস্তবায়নে অনড় খালেদা
জাহিদ হোসেন বিপ্লব
প্রিন্ট অ-অ+
১৯ মার্চ  জাতীয় কাউন্সিলের পর বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে কয়েক দফায় দলের মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষের নাম ঘোষণা করেছেন। তবে এখনো দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা বাকি আছে।  তিন ধাপে ৪২ জনের নাম ঘোষণা করা হলেও এক নেতার এক পদ বাস্তবায়ন নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে দলটির শীর্ষনেতৃবৃন্দ। তবে এ বিষয়ে এখনো কঠোর অবস্থানে বিএনপি চেয়ারপারসন। 
 
এ নিয়ে সম্প্রতি পদ পাওয়া নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যারা একাধিক পদে রয়েছেন, তাদের অবশ্যই নিজের পছন্দসই পদ রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দিতে হবে। এটা চেয়ারপারসনের নির্দেশ।
 
পদ ঘোষণা হওয়ায় বেশিরভাগ জেলা বা উপজেলায় দলটির স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা কেন্দ্র্রের চেয়ে স্থানীয় পদের দিকেই ঝুঁকছেন বেশি। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য, কেন্দ্রে থাকলে জেলা পর্যায়ে মূল্যায়ন কম হয় এই ভয়ে কেন্দ্রের পদ চাইছেন না। স্থানীয় প্রভাব ধরে রাখতেই  যুগ্ম মহাসচিব বা সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো লোভনীয় পদ পেয়েও জেলা নেতৃত্বকে আঁকড়ে রাখতে চান তারা। এ নিয়ে কেউ কেউ বিএনপিপ্রধানকে নানা যুক্তিও দেখিয়েছেন। তবে বিএনপি প্রধান তাদের কোনো আশ্বাস দেননি। কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়া বেশ কয়েকজন জেলা নেতা বলেন, খণ্ডবিখণ্ড বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কিংবা সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদের চেয়ে জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
 
নব-নির্বাচিত যুগ্ম-মহাসচিব এবং বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান সারোয়ার বলেন, দলের স্বার্থে কেন্দ্রীয় পদ রেখে তার জেলা সভাপতির পদ ছাড়া ঠিক হবে না। এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার দুই পদে থাকা প্রয়োজন। 
 
রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সভাপতি আলী নেওয়াম মাহমুদ খৈয়াম সদ্যঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছেন। কিন্তু এক নেতার এক পদের বিধান চালু হওয়ায় তিনি জেলার নেতৃত্বেই থাকতে চান। সম্প্রতি তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করে কেন্দ্রের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। 
 
একই অবস্থা চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসেম বক্করেরও। তিনিও চেয়ারপারসনের কাছে আবেদন করে চট্টগ্রাম মহানগরের রাজনীতিতে থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া মৌখিক আবেদন করেছেন সদ্য দায়িত্ব পাওয়া চট্টগ্রামের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনও। চট্টগ্রামের এই দুই নেতা কেন্দ্রের পদ থেকে অব্যাহতি চান। 
 
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের আগেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে চায় বিএনপি। কিন্তু এক নেতার এক পদ গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলার শীর্ষ নেতাদের ধারণা, জেলা হাতছাড়া হয়ে গেলে ভবিষ্যতে এমপি হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়। তাছাড়া কেন্দ্রে অনেক জুনিয়র নেতাকে সিনিয়র পদে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রণে না থেকে একটি জেলার দায়িত্ব থাকাটাকেই তারা শ্রেয় মনে করছেন। এতে মাঠের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে থাকাও যাবে, পাশাপাশি মাঠের নেতা হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার বিষয়টিও অনেকটা নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন তারা। 
 
যুগ্ম মহাসচিব পদ পাওয়া এক নেতা বলেন, চেয়ারপারসন আমাদের কেন্দ্রে দায়িত্ব দিয়েছেন। সেইসঙ্গে আমরা এখনো দলের জেলার দায়িত্বে আছি। হুট করে জেলার দায়িত্ব ছেড়ে দিলে এলাকায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। 
 
এ বিষয়ে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেন, ‘এক নেতার এক পদ’ নীতি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। হঠাৎ বাস্তবায়ন করা কঠিন। মহানগর ও জেলা পর্যায়ে অনেকে আশ্বাস দিয়েছেন একাধিক পদ ছেড়ে দেয়ার। আশা করি, দ্রুত এর সমাধান হবে।
 
এ প্রসঙ্গে যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বিবার্তাকে জানান, মৌখিকভাবে তিনি অনেক আগেই যুবদলের সভাপতি ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ ছেড়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি দলের চেয়ারপারসন ও মহাসচিবের কাছেও লিখিতভাবে চিঠি দিয়েছেন। তবে চেয়ারপারসন তাকে যুবদলের নতুন কমিটি হওয়ার আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন।
 
বিবার্তা/বিপ্লব/মৌসুমী/হুমায়ুন
 
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com