নতুন নামে জামায়াত, পুরনো নেতৃত্ব আউট

আমির হওয়ার দৌড়ে তিনজন
নতুন নামে জামায়াত, পুরনো নেতৃত্ব আউট
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০১৬, ০০:০১:০৮
নতুন নামে জামায়াত, পুরনো নেতৃত্ব আউট
জাহিদ বিপ্লব
প্রিন্ট অ-অ+

নিষিদ্ধ হলে নতুন নেতৃত্বে আবারো সংগঠিত হবে জামায়াতে ইসলামী। নেতৃত্বে থাকবে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম৷ পরিবর্তন হবে নাম ও লোগো। ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে। চেষ্টা করবে এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন লাভ করতে। জামায়াতের পরবর্তী কেন্দ্রীয় আমির হওয়ার দৌড়ে নতুন ও পুরনো মিলিয়ে তিন নেতা রয়েছেন। তারা হলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, ঢাকা মহানগর সভাপতি ও দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা রফিকুল ইসলাম এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মকবুল আহমাদ।

জানতে চাইলে নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক একাত্তর পরবর্তী প্রজন্মের এক নির্বাহী পরিষদ সদস্য বিবার্তাকে বলেন, ‘আমার কাছে যে তথ্য আছে, তাতে জামায়াত-শিবিরের তরুণ নেতৃত্ব এখন আর পুরনোদের দায় নিতে চান না৷ একাত্তরে যারা স্বাধীনতাবিরোধী এবং মানবতাবিরোধী ভূমিকা নিয়েছেন, তাদের দায়মুক্ত হতে চান তারা৷ তারা চান নতুন নামে এক ইসলামী রাজনৈতিক দল, যেখানে অতীতের কোনো দায় থাকবে না।’

কিভাবে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন জানতে চাইলে বলেন, সেই প্রক্রিয়া কেমন হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ নতুন নেতৃত্বের জন্য জামায়াতের তরুণরা কাজ করছেন৷

জানা যায়, একাত্তরে স্বাধীনতা বিরোধিতাকারী সংগঠনটি সাংগঠনিকভাবে নিষিদ্ধ হওয়ার আতঙ্কেও ভুগছে। শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে সংগঠনটি নতুন নামে আত্মপ্রকাশের কথা ভাবছে। সে অনুযায়ী আগাম প্রস্তুতিও রয়েছে। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সাত বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত নেতাদের দিয়ে দল চালানোর পর শেষ পর্যন্ত সাংগঠনিক অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের তৎপরতা শুরু হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় শিগগিরই দলের আমিরসহ গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষস্থানীয় পদগুলোয় নতুন মুখ দেখা যাবে।

সাত বছর ধরে জামায়াতের ঢাকা মহানগর ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে কোনো অফিস খোলা রাখতে পারেনি নেতাকর্মীরা। এক সময়ের সুসংগঠিত দলটি চরম প্রতিকূল অবস্থায় দলটির বেহাল দশা। প্রকাশ্য সাংগঠনিক তৎপরতা নেই। ইতিমধ্যে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে।  

আর জামায়াতের সাবেক আমির ও থিংক ট্যাংক গোলাম আযম আজীবন কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে কারাগারেই মারা গেছেন৷ আজীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন দলটির নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসে সাঈদী।একই অপরাদের দায়ে জামায়াতের আরেক নায়েবে আমির আবদুস সুবহান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাশেম আলী ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলামের ফাঁসির রায় হয়েছে।

এ অবস্থায় দলটির জামায়াতের অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা বলছেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতা করে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা যে ভুল করেছেন তার দায় নতুন প্রজন্মের নেতাকর্মীরা নিতে চায় না। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাজা ভোগ বা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর শেষে নতুনভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে দলকে। সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হলে নতুন কৌশলে অগ্রসর হবে দল। সে ক্ষেত্রে সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে টিকে থাকবে জামায়াত। আর দলের নেতৃত্বে আসবে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্ম। তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে। একই সঙ্গে ত্যাগ করবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতাদের।

বিবার্তা/বিপ্লব/জিয়া
 

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com