মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চট্টগ্রামের আলোচিত নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার মতো সিনিয়র নেতারা বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে ঠাঁই না পেয়ে অভিমান করে দূরে সরে রয়েছেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে গণমাধ্যমসহ বিএনপি শিবিরে আলোচনা ছিল, স্থায়ী কমিটির পরিধি বাড়িয়ে এই তিনজনকে স্থায়ী কমিটিতে নিতে পারেন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু স্থায়ী কমিটির পরিধি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নবগঠিত স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য ।
বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠকসূত্রে জানা গেছে, রামপাল, ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি, সরকারবিরোধী আন্দোলন, বিশেষ করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি হলে জোরালো কর্মসূচি দেয়ার বিষয়ে বৈঠকে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। এছাড়া সদ্যঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে যোগ্য নেতাদের কিভাবে ঠাঁই দেয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য স্থায়ী কমিটির পরিধি বাড়িয়ে কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে কমিটিতে স্থান দেয়ার সুপারিশ করেন। বেগম জিয়া প্রত্যুত্তরে কিছু বলার আগেই দলে কট্টরপস্থি হিসেবে পরিচিত তিনজন সদস্য বলে ওঠেন, কাউকে পদে বসানোর জন্য স্থায়ী কমিটির সদস্যসংখ্যা বাড়ানো ঠিক হবে না।
স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যোগ্যদের স্থায়ী কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। যাদের যোগ্য মনে করেননি তাদের ঠাঁই দেননি। যারা মিডিয়ায় এটা নিয়ে সমালোচনা করছেন তারা দলের ভালো চান না।
দুই পক্ষের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু তিনি কোনো মন্তব্য না করলেও স্থায়ী কমিটি না বাড়ানোর বিষয়ে আকার-ইঙ্গিতে খালেদা জিয়া একমত পোষণ করেছেন বলে জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা ।
তবে অন্যান্য পদে বঞ্চিত নেতাদের ঠাঁই দেয়ার ব্যাপারে বেগম জিয়ার মনোভাব ইতিবাচক বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার নবগঠিত প্রথম স্থায়ী কমিটির সভা হলেও তাতে অংশ নেননি লে.জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, এম কে আনোয়ার, ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না।
এর মধ্যে খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান দীর্ঘ দিন লন্ডনে বসবাস করায় স্বাভাবিকভাবেই তিনি বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে নতুন স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়েই অদৃশ্য কারণে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আর ভারতে অবস্থানের কারণে উপস্থিত হতে পারেননি নতুন আরেক সদস্য সালাইউদ্দীন আহমেদ। তবে এম কে আনোয়ার ও ড. আব্দুল মইন খান অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত থাকলেও লে. জে. অব: মাহবুবুর রহমান অভিমান করেই স্থায়ী কমিটির সভায় যোগ দেননি বলে জানা গেছে। তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, লে.জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান আগের কমিটিতে স্থায়ী কমিটির আট নম্বর সদস্য থাকলেও এবার তা আরো দুই ধাপ নিচে নেমে যাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
বিবার্তা/বিপ্লব/মৌসুমী/হুমায়ুন