তারপরও চামড়ার ঠিকানা হাজারীবাগই

তারপরও চামড়ার ঠিকানা হাজারীবাগই
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৪:০২:৫১
তারপরও চামড়ার ঠিকানা হাজারীবাগই
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+
সাভারে যথাযথভাবে বিকল্প গড়ে না তুলে আগেভাগেই হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি তুলে দেয়ার ঘোষণাই এই শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন চামড়া শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। 
 
তারা বলছেন, সাভারে চামড়া শিল্পনগরী গড়ে তোলা হলেও পর্যাপ্ত অবকাঠামো নিশ্চিত না করার কারণে এবারও কোরবানির পশুর সিংহভাগ কাঁচা চামড়া যাবে রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোতে। 
 
তারা মনে করছেন, পরিবেশদূষণ রোধে অবশ্যই আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরাতে হবে। কিন্তু তার আগে সাভারে চামড়াশিল্প নগরীর অবকাঠামো নিশ্চিত করা জরুরি।
 
সূত্র মতে, সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর না করায় মালিকদের প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হচ্ছে; তারপরও তারা হাজারীবাগ থেকে সরতে চাইছেন না। বিকল্প হিসেবে সাভার উপযুক্ত হয়ে না ওঠায় ১৩০ থেকে ১৪০ ট্যানারি-মালিক হাজারীবাগেই আড়ৎদারদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনবেন।
তারপরও চামড়ার ঠিকানা হাজারীবাগই
২০০১ সালে হাইকোর্ট এক রায়ে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি শিল্প সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। এদিকে সরকার ঢাকার অদূরে সাভারে ২০০ একর জমিতে চামড়া শিল্পনগরী গড়ে তুলতে শুরু করে ২০০৪ সালে। ২০০৯ সালের ২৩ জুন হাইকোর্টের আরেক আদেশে ট্যানারি শিল্প সরানোর জন্য ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। সরকার পক্ষের আবেদনে সেই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়ানোও হয়।
 
একপর্যায়ে ২০১৪ সালে রিটকারী সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই ১০টি প্রতিষ্ঠানের মালিককে তলব করেন। আদালতের ওই আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় রিটকারী আদালতে সম্পূরক আবেদন করেন। পরে গত ১৬ জুন আদালত ১৫৪টি ট্যানারি সাভারে না সরানো পর্যন্ত পরিবেশ দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রত্যেক ট্যানারি মালিককে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার আদেশ দেন। রায়ের বিরুদ্ধের আপিল শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আপিল নিষ্পত্তি করে। এতে ১৫৪ মালিককে ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।
 
তারপরও সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে এখন পর্যন্ত স্থাপিত হয়েছে কেবল ২৫ থেকে ৩০টি ট্যানারি। বিদ্যুৎ-গ্যাসের সংযোগ আর বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি প্ল্যান্ট) না থাকায় উৎপাদনে যেতে পারছেন না ওই ট্যানারির মালিকেরা। শুধু তাই নয়,  শোধনাগার (ইটিপি প্ল্যান্ট) তৈরি না হওয়ায় সেখানে কাঁচা চামড়া কিনতেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ট্যানারি মালিকেরা।
 
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহিন আহমেদ বলেন, ‘এবারও কোরবানির পশুর সিংহভাগ কাঁচা চামড়া হাজারীবাগের ট্যানারিগুলো কিনবে। কারণ, সাভারের ট্যানারিগুলোতে এখনও বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়নি। সেখানে এখনও বর্জ্য শোধনাগার তৈরি করে দেয়া হয়নি। এমনকী এখনও গ্যাসের সংযোগও দেয়া হয়নি।’ 
 
তিনি মনে করেন, বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি প্ল্যান্ট) ছাড়াই যে, ৫/৬টি ট্যানারি চালু করা হয়েছে, তাদের কারণে সেখানকার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
 
এদিকে, লবণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানির পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের খরচও বাড়ছে। এ অবস্থায় স্থানীয় আড়ৎদারেরা এবার লাভ করা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। কারণ লোকসান এড়াতে ট্যানারি-মালিকেরা এবার আড়ৎদারদের কাছ থেকে ৫০ টাকা বর্গফুট দরে গরুর চামড়া কিনবেন।
 
এ প্রসঙ্গে শাহিন আহমেদ জানান, লোকসান এড়াতে চামড়ার দাম এবার তুলনামূলকভাবে কম নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী, প্রতি বর্গফুটে ২০ টাকা করে কমলেও বাংলাদেশে গতবারের চেয়ে বর্গফুট প্রতি মাত্র ৫ টাকা কমানো হয়েছে।’
 
বিবার্তা/জিয়া
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com