চট্টগ্রাম বন্দরে স্মরণকালের কন্টেইনার-জট

চট্টগ্রাম বন্দরে স্মরণকালের কন্টেইনার-জট
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ০৮:২৮:৫১
চট্টগ্রাম বন্দরে স্মরণকালের কন্টেইনার-জট
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+
প্রাইমমুভার ট্রেইলর ধর্মঘটের কোন সুরাহা না হওয়ায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে কন্টেইনারের পাহাড় গড়ে উঠছে। এতো বেশি কন্টেইনার জট এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে দেখা যায়নি। বিদেশী মাদার ভ্যাসেলগুলো কন্টেইনার না পেয়ে পণ্য ছাড়াই বন্দর ছাড়ছে। জানা গেছে, পাঁচটি জাহাজের প্রায় ছয় হাজার কন্টেইনার ১৬টি অফ ডকে আটকা পড়ে আছে। 
 
এর মাধ্যমে ভয়াবহ রকমের অবস্থার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে দেশের আমদানি বাণিজ্য। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রের তথ্য মতে, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৩০০ টিইইউএস কন্টেইনার আটকা পড়ে আছে। এটি স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি কন্টেইনার আটকা পড়ার ঘটনা। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দুয়েক দিনের মধ্যে জাহাজ থেকে কন্টেইনার নামানো বন্ধ করে দিতে হবে। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা ধর্মঘট লাগাতার হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
 
চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের আশি শতাংশেরও বেশি পরিবাহিত হয়। আমদানি পণ্যের মধ্যে খোলা পণ্য ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যানে পরিবহন করা হলেও কন্টেইনার, বিলেট, স্টিল কয়েল, কারখানার যন্ত্রপাতিসহ সকল ভারি পণ্য পরিবহন করা হয় প্রাইমমুভার ট্রেইলর দিয়ে। চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রিক দশ হাজারেরও বেশি প্রাইমমুভার ট্রেইলর রয়েছে। 
 
দাউদকান্দি এবং মেঘনা সেতুর স্কেলে ৩৩ টনের বেশি পণ্য বোঝাই গাড়ি আটকে দেয়ার জের ধরে প্রাইমমুভার ট্রেইলর মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ গত সোমবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করে। এতে একই সাথে ১৬টি অফডক থেকে বন্দরে রপ্তানি পণ্য পাঠানো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে একদিকে বন্দরে কন্টেনারের পাহাড় গড়ে উঠছে। 
 
অন্যদিকে বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতকৃত কন্টেইনার বন্দরে নেয়া যাচ্ছে না। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার জটের পাশাপাশি বন্দর থেকে খালি জাহাজ ছেড়ে যাচ্ছে।
 
অপরদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (এডমিন অ্যান্ড প্ল্যানিং) মোহাম্মদ জাফর আলম জানান, অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি কন্টেইনার আটকা পড়েছে বন্দরের অভ্যন্তরে। আমদানি কন্টেনারের বিশাল পাহাড় এখন বন্দরের ইয়ার্ডগুলো। জরুরি ভিত্তিতে কোন পদক্ষেপ নেয়া না হলে আজকালের মধ্যে জাহাজ থেকে কন্টেইনার নামানো বন্ধ করে দিতে হতে পারে। 
 
তিনি বলেন, এই সংকটের সুরাহা হলেও এর রেশ অনেকদিন থেকে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরকে এর জের সামলাতে বেশ বেগ পেতে হবে। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে প্রাইমমুভার ট্রেইলর মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবির বলেন, আমাদের কিছু করার নেই। সরকার যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তা বহাল থাকলে কন্টেইনার পরিবহন করা যাবে না। 
 
তিনি বলেন, একটি কন্টেনারে কমপক্ষে চব্বিশ টন পণ্য বোঝাই করা হয়। কন্টেনারের ওজন দুই টন। গাড়ির ওজন বারো টন। সব মিলে কমপক্ষে ৩৮ টন ওজন হয় একটি কন্টেইনার বোঝাই গাড়ির। এখন ৩৩ টনের বেশি যদি চলতে দেয়া না হয় তাহলে পরিস্থিতি কি দাঁড়াচ্ছে। কেউ বিদেশ থেকে চব্বিশ টন পণ্য বোঝাই কন্টেইনার পণ্য এনে এখানে খুলে পাঁচ টনের জন্য কী অন্য গাড়ি ভাড়া করবে?
 
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী যে ওজনে গাড়ি চলে বাংলাদেশে যদি তার থেকে কম ওজন বেঁধে দেয়া হয় তাহলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কী করে চলবে?
 
এদিকে চট্টগ্রাম চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব খলিলুর রহমান জরুরি ভিত্তিতে সংকটের সুরাহার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
 
বিবার্তা/জিয়া
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com