ভয়াবহ সংকটে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য

ভয়াবহ সংকটে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য
প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ০৮:২৫:২৬
ভয়াবহ সংকটে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+
প্রাইমমুভার ট্রেইলার মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটে ভয়াবহ সংকটে পড়েছে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার ডেলিভারি না হওয়ায় বন্দরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৪০ হাজার ২৫৯ কন্টেইনার জমা রয়েছে। ১৬টি অফডকেও কন্টেইনার রাখার কোনো জায়গা নেই। 
 
এদিকে বন্দর থেকে কাঁচামাল কারখানাগুলোতে না যাওয়ায় কারখানায় উৎপাদন সংকটের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি পণ্যও পাঠানো যাচ্ছে না। গত সোমবার থেকে কন্টেইনারবাহী প্রায় আট হাজার প্রাইম মুভারের ধর্মঘটের কারণে সৃষ্ট এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
 
ব্যবসায়ীদের মতে, যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ৩৩ টনের বেশি মালামাল পরিবহনকারী মহাসড়কে চলতে পারবে না এই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাইমমুভার চালক মালিকরা ধর্মঘটে গিয়েছে। এ বিষয়ে বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘দেশের এতো বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ের কেউ বিষয়টি সুরাহা করতে তৎপর হচ্ছেন না। বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। চলমান সমস্যাটি অবশ্যই সমাধান হবে। কিন্তু এই সমাধান যদি একদিন আগে হয়, তাহলে আমাদের একদিনের ক্ষতি কমে আসবে। আর এই ক্ষতি তো প্রকারান্তরে গিয়ে দেশের মানুষের উপর পড়বে। তবে প্রাথমিকভাবে সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্যবসায়ীরা।’
 
চিটাগাং চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, ‘ঈদের আগে লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট, পরে ঈদের বন্ধ ও এখন আবার প্রাইমমুভার চালক মালিকদের ধর্মঘট। সব  মিলিয়ে কোথায় যেন একটি ষড়যন্ত্র দেখা যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর যেখানে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে তা যেন পেছনে থেকে টেনে ধরছে। আর সংকটের সাথে এখন যুক্ত হচ্ছে কাভার্ডভ্যান ও ট্রাক চালকদের ধর্মঘটও। তাহলে সারাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যে অশনি সংকেত নেমে আসবে।’
 
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এটি যে একটি ষড়যন্ত্রের অংশ তা তাদের আন্দোলনের ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছে। দাউদকান্দি সেতুর কাছে ৩৩ টনের অধিক ওজনের প্রাইমমুভার নেয়ার কারণে ১২ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে আমদানি ও রপ্তানিবাহী কন্টেইনার পরিবহনে কাজ করে ১৬টি অফডক। এই ১৬টি অফডকের অবস্থান একদিকে পতেঙ্গা ও অপরদিকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত। এখানে তো কন্টেইনারবাহী প্রাইম মুভার চলাচলে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাহলে এখানে কেন তারা (প্রাইমমুভার চালক মালিক) বন্ধ করে দিয়েছে? আবার তাদের সাথে আগামীকাল শনিবার থেকে কাভার্ডভ্যান ও ট্রাক মালিক শ্রমিকরা কেন একইভাবে আন্দোলনে যাচ্ছে?
 
আন্ত:জিলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি মুনীর আহম্মদ বলেন, ‘দাউদকান্দির সেতুর কাছে জরিমানার বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তাহলে বন্দর থেকে আমাদের যে ওজনের মালামাল দেবে আমরা সেই ওজনের মালামাল নিয়ে যাব। কিন্তু জরিমানা করায় সেই টাকা আমাদেরকে দিতে হচ্ছে, আর তা বন্ধ করতেই এই আন্দোলন।’
 
বন্দর থেকে কন্টেইনার বের হচ্ছে না বলে বন্দরে কন্টেইনার জট মারাত্মক পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের মুখপাত্র ও বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম বলেন, বন্দরের ধারণক্ষমতা রয়েছে ৩৬ হাজার ৩৫৭ টিইইউএস কন্টেইনার (২০ ফুট দৈর্ঘ্য) কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বন্দরে রয়েছে ৪০ হাজার ২৫৯ টিইইউএস কন্টেইনার। বন্দরে এখন কন্টেইনার রাখার জায়গা নেই বললেই চলে। 
 
বিবার্তা/জিয়া
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com