উত্তরপত্র মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদ এবং তার স্ত্রী একই বিভাগের প্রভাষক সোমা দেবকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম থেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মুহম্মদ মিজান উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিভাগের সদ্য প্রয়াত সহযোগী অধ্যাপক এবং তানভীর আহমদের সাবেক স্ত্রী আকতার জাহান জলির করা অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বহিষ্কার করা হলো। আকতার জাহানের আত্মহত্যার পরই আলোচনায় আসেন ওই দম্পতি।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের তৃতীয় বর্ষের ৩০৫ নম্বর কোর্সের যৌথভাবে শিক্ষক ছিলেন তানভীর আহমদ এবং সোমা দেব। কোর্সটির দুটি ইনকোর্সের মধ্যে প্রথম ইনকোর্সের দায়িত্বে ছিলেন তানভীর আহমদ। সেটির নম্বর তানভীর আহমদের দেয়ার কথা থাকলেও নম্বরপত্রে উল্লেখ আছে সোমা দেবের হাতে লেখা নম্বর। সেখানে কয়েকটি নম্বরে ঘষামাজা করেন সোমা দেব। ঘাষামাজা জায়গাগুলোতে স্বাক্ষরও করেন সোমা দেব। তবে মূল পরীক্ষকের স্বাক্ষর হিসেবে উল্লেখ আছে তানভীর আহমদের স্বাক্ষর। নম্বরপত্রে এমন অনিয়মের ফলে ওই বর্ষের ৮ জন শিক্ষার্থী ইনকোর্স দিয়েও কোনো নম্বর পায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. আসাবুল হক জানান, বিষয়টি নিয়ে ওই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির প্রধান এবং সদ্য প্রয়াত সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, পরীক্ষার নম্বরপত্রে অস্বচ্ছতার কারণে বিভাগ একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেটি তদন্ত করে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের দুজনকে পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম থেকে পাঁচ বছরের জন্য অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় সোমা দেবের সংশ্লিষ্টতা আর একবার তদন্ত করে দেখা হবে।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর বিভাগের অ্যাডেমিক কমিটির সভায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহান জলির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তার সাবেক স্বামী তানভীর আহমদের প্রতি অনাস্থা জানায় ১৬ জন শিক্ষক। এর পরিপ্রেক্ষিতে তানভীর বিভাগের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে নিজেকে সাময়িক প্রত্যাহার করে নেন।
বিবার্তা/নাঈম/পলাশ/রয়েল