আলাদা আলাদা ধরনের হওয়ায় প্রতিটি মানুষেরই শেষ ইচ্ছা থাকে একেক রকম। সে হিসেবে উইলও হয় আলাদা ধরনের। অদ্ভুত চারটি উইলের কাহিনী শুনুন, যা বেশ অদ্ভুত।
ভার্জিল (মৃত্যু খ্রিস্টপূর্ব ১০): রোমের এক সময়ের জাতীয় কবি হিসেবে সম্মানিত এই বিখ্যাত মানুষটির শেষ ইচ্ছে ছিল তার অন্যতম অমর সৃষ্টি ঈনিডকে পুড়িয়ে ফেলা। পুরো জীবনে মোট ১২টি বই লিখেছিলেন তিনি। অসমাপ্ত ছিল ঈনিড বইটি। আর তাই অসমাপ্ত কাজকে ধ্বংস করে দিতেই উইলে এমন ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন তিনি। অবশ্য পরবর্তীতে মৃত্যুর আগে বন্ধুরা সবাই মিলে ভার্জিলকে অনেক অনুরোধের পরে ঈনিড না পোড়ানোর ব্যাপারে সম্মত করতে সমর্থ হয়েছিলেন!
উইলিয়াম শেকসপিয়র (মৃত্যু ১৬১৬): মৃত্যুর আগে নিজের ইচ্ছাপত্রে শেকসপিয়র জানিয়েছিলেন যে তিনি চান তার স্ত্রী অ্যানা হ্যাথাওয়ে তার দ্বিতীয় সেরা বিছানাটি পাক। সেসময় অবশ্য খাটের দাম অনেকটাই বেশি ছিল। সেটাকে এর কারণ বলে ধরে নেয়া যায়। তবে শেকসপিয়রের কবরের ফলকে লেখা শেষ কথাগুলো কেউ পড়লে তার মনে হবে, নিজেকে আর নিজের সেরা বিছানাকে সবসময়েই রক্ষা করতে চেয়েছেন তিনি সবার কাছ থেকে।
ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট (মৃত্যু ১৭৯০): ফ্রাঙ্কলিন তার ইচ্ছাপত্রে লিখেছিলেন (মেয়ে সারাকে উদ্দেশ্য করে) সে যেন অহেতুক অতিরিক্ত গহনা না পরিধান করে। ফ্রাঙ্কলিনের এই অদ্ভুত ইচ্ছে কারণ ছিলেন ফ্রান্সের এক রাষ্ট্রদূত। বিখ্যাত এই মানুষটিকে তিনি একদা কিং লুইস ১৬এর একটি ৪০৮ টি হীরে লাগানো পোট্রেট উপহার দিয়েছিলেন। ফ্রাঙ্কলিন জানতেন যে তার মৃত্যুর পর সেই পোট্রেট ও এর হীরেগুলো তার মেয়ে সারা পাবে। তাই সে যাতে সেগুলোকে খুলে নিয়ে গহনা না বানায় সেজন্যেই এমনটা উইল করেছিলেন তিনি।
হ্যারি হুডিনি (মৃত্যু ১৯২৬): হুডিনি তার উইলে লিখেছিলেন, মৃত্যুর পর স্ত্রী যেন আমার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে। পুরো জীবনে হুডিনির ধ্যানজ্ঞান ছিল একটিই। আর সেটি হচ্ছে মৃত মায়ের সাথে যোগাযোগ করা। হুডিনি মাকে খুবই ভালোবাসতেন। কিন্তু কখনই সেটা সম্ভব হয়নি। মা ছেলের ডাকে সারা দেননি। কিন্তু তাতে কি? একদমই দমে যাননি হুডিনি। বরং, এই উইলের মাধ্যমে স্ত্রীকে দশটি শব্দ লিখে দিয়ে যান তিনি আর জানান তার মৃত্যুর পর সেই ১০ টি শব্দ উচ্চারণ করেন যাতে প্রতি হ্যালোউইনে ডাকা হয় তাকে। স্ত্রী স্বামীর কথা ফেলেননি। তবে লাভও হয়নি কিছু। হুডিনি সাড়া দেননি।
বিবার্তা/জিয়া