ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে গরীবুল্লাহ আকন্দ (৬০) নামে বাংলা ভাইয়ের এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দুল্লা ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মুক্তাগাছা থানার ওসি ফজলুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গরীবুল্লাহর নামে থানায় চারটি মামলা রয়েছে। তিনি একসময় বাংলা ভাইয়ের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করতেন। এলাকায় তিনি গরিবুল্লাহ মুন্সি নামে পরিচিত।
তিনি বলেন, গরীবুল্লাহর বিরুদ্ধে মুক্তাগাছা থানায় হত্যা, ডাকাতি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে চারটি মামলা রয়েছে। তিনি বাংলা ভাইয়ের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন।
বিন্নাকুড়ি গ্রামের আজিতউল্লাহ আকন্দের ছেলে গরীবুল্লাহ এক সময় জামালপুরের বন্দচিতলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরেও একবার বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি।
২০০৬ সালের ৬ মার্চ মুক্তাগাছার ওই এলাকা থেকেই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন জেএমবির শুরা কমিটির প্রধান সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই। সারা দেশে ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি বেশ কিছুদিন ওই এলাকায় আস্তানা গেড়ে ছিলেন।
বাংলা ভাই ও তার সহযোগীরা ২০০৪ সালের ২০ মে নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলায় ইদ্রিস আলী ওরফে খেঁজুর আলী ও আব্দুল কাইয়ুম বাদশাকে হত্যা করে। পরে বাদশার মরদেহ উল্টো করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়; খেঁজুর আলীকে টুকরো টুকরো করে লাশ পুঁতে ফেলা হয় মাটিতে। গাছে লাশ ঝুলিয়ে রাখার সেই ছবি সংবাদমাধ্যমে এলে দেশজুড়ে রাতারাতি পরিচিত হয়ে ওঠে বাংলা ভাই নামটি।
২০০৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সরকার জেএমবি ও জেএমজেবির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে ওই বছর ১৭ অগাস্ট ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা ফাটিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দেয় সংগঠনটি।
ঝালকাঠি জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যার দায়ে ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ও বাংলাভাইসহ ছয় জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
এরপর টানা অভিযানে যে জেএমবির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা দিয়ে এলেও গত তিন বছরে অধিকাংশ জঙ্গি হামলা ও হত্যার জন্য জেএমবিকেই দায়ী করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিবার্তা/নাজিম/লিয়ন/জিয়া