মোহাম্মদ আলী মন্ডল নামে এক ভুয়া সাংবাদিককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) জোন-৪ কর্তৃপক্ষ। একটি জাতীয় দৈনিকের পরিচয় দিয়ে সংস্থার বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবি করায় তাকে আটক করা হয়।
সোমবার দুপুরে মহাখালী রাজউক কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আটক মোহাম্মদ আলী মন্ডল মিরপুরে থাকেন। তিনি শেরপুর জেলায় ঝিনাইগাতী উপজেলার হাইমুন আলী মন্ডলের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার দুপুর থেকেই মোহাম্মদ আলী রাজউকের ওই আঞ্চলিক কার্যালয়ে গিয়ে দৈনিক মানবকণ্ঠের সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন কর্মকর্তার কক্ষে গিয়ে চাঁদা দাবি করেন। পরে তিনি অঞ্চল-৪ এর (গুলশান-বারিধারা-বনানী) পরিচালক সওদাগর মোস্তাফিজুর রহমানের (যুগ্ম সচিব) কক্ষে গিয়েও টাকা দাবি করেন।
এ ব্যাপারে সওদাগর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মোহাম্মদ আলী পত্রিকার ভিজিটিং কার্ড পাঠানোর পরে আমি তাকে সাক্ষাতের সুযোগ দেই। কিন্তু তার কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। সত্যতা যাচাই করার জন্য আমি মানবকণ্ঠের একজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপ করি। এক পর্যায়ে পত্রিকাটির সম্পাদকের সঙ্গে আলাপ শেষে একজন রিপোর্টার এনে যাচাই করে আমরা নিশ্চিত হই যে তিনি সাংবাদিকই নন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করি।
রাজউক কার্যালয়ের আরো কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, রবিবার রাত ৯টার দিকে তাদের মোবাইলে ০১৭৪১০৯০৯১৩ নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলা হয়- আমি সময় টিভির বার্তা সম্পাদক পরাগ বাবু বলছি, আমার একজন সাংবাদিকের মায়ের অসুস্থতার জন্য কিছু সাহায্য দরকার। ওই সাংবাদিক আপনার কাছে যাবে তাকে কিছু টাকা দিয়েন।
মোহাম্মদ আলীকে আটক করা বনানী থানার সহকারী পরিদর্শক (এসআই) সোহরাব হোসেন বলেন, তার কাছ থেকে শতাধিক ভিজিটিং কার্ড পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী (স্টাফ রিপোর্টার) মানবকণ্ঠ ও সময় টিভির বার্তা সম্পাদক পরাগ বাবু নামে কিছু কার্ড রয়েছে। এছাড়া তার কাছ থেকে রাজউক ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ও মোবাইল নম্বর সংবলিত ৬০ পাতার একটি ফাইল পাওয়া গেছে।
ওই পাতায় সে যেসব কর্মকর্তার কাছ থেকে মায়ের নামে সাহায্য চেয়ে অর্থ নিয়েছেন তাদের নামের সামনে অর্থের পরিমাণ ও কিছু নামের সামনে ‘ছেচরা’ লেখা রয়েছে।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আটকৃত ব্যক্তির নামে চাঁদাবাজি, সরকারি কর্মকর্তাকে হুমকি ও চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে। তাছাড়া সম্প্রতি রাজউকের এ কার্যালয়ে একটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে, যার তদন্ত এখনো চলছে। আটক ব্যক্তি ওই চুরির সঙ্গে জড়িত কি না তাও তদন্ত করা হবে।
বিবার্তা/রোকন/কাফী