গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার আরেক হোতার সাংগঠনিক নাম প্রকাশ করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তার সঙ্গে যোগাযোগ করেই রেস্তোরাঁটিতে অবস্থানরত জঙ্গিরা ভেতরের ছবি পাঠিয়েছিল।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গুলশানের ঘটনায় যে পাঁচজন এসেছিল, তারা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে হেঁটে এসেছিল। তারা এসেছিল বসুন্ধরার বাসা থেকে এবং একটা সময় পর্যন্ত তাদের মূল মাস্টারমাইন্ড (তামিম) সঙ্গে ছিল শুধুমাত্র অনুপ্রাণিত করার জন্য। পরে তার পক্ষে আরেকজন সন্ত্রাসী যে শীর্ষ পর্যায়ের একজন সংগঠক, একজন মাস্টারমাইন্ড; তার সঙ্গে যোগাযোগ করেই তারা (ভেতরের জঙ্গি) ছবি পাঠিয়েছে। অবশ্য সরাসরি কাউকে ছবি পাঠানো হয়নি। ছবি পাঠানো হয় একটি আইডিতে। আর অন্যান্য যে কমিউনিকেশন, যেগুলো আমরা পেয়েছি, সেগুলো তার সঙ্গে ছিল।
তামিমকে গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা চালিয়ে ২২ জনকে হত্যার পেছনের মূল ব্যক্তি বলে মনে করছে পুলিশ। ২৬ জুলাই কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নয়জন নিহতের পর যে মামলা হয়েছে তাতেও তাকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, যার ছবি পাওয়া গেছে, তার সংগঠনিক নাম হলো মারজান। আমরা তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আমরা পাইনি। সেই ছবির সূত্র ধরে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মারজান বাংলাদেশি কি না- জানতে চাইলে অতিরিক্ত এই পুলিশ কমিশনার বলেন, “সে বাংলাদেশি এবং সম্ভবত ঢাকা শহরের কোথাও থাকতে পারে।”
মনিরুল ইসলাম বলেন, মারজান পড়াশুনা কোথায় করেছে, তা আমরা বুঝতে পারিনি। এদের সঙ্গে (বৃহস্পতিবার গ্রেফতার পাঁচজন) কথা বলে এবং অন্যান্য সময় যারা ধরা পড়েছে, তাদের রিমান্ডে এনে কথা বলেছি। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের মনে হয়েছে, সে (মারজান) মোটামুটি শিক্ষিত তরুণ।
সন্ত্রাসী হামলার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর সশস্ত্র বাহিনী অভিযান চালিয়ে গুলশানের ওই ক্যাফের নিয়ন্ত্রণ নেয়। সে সময় নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে জেএমবি সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
ওই ছয়জনের মধ্যে সাইফুল চৌকিদার নামে একজন ছিলেন ওই বেকারির পাচক। তিনিও ‘হামলাকারীদের সঙ্গে থেকে তাদের সহায়তা করেন’ বলে মামলায় অভিযোগ করেছে পুলিশ।
তার বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান বলেন, বাইরে থেকে পাঁচজন জঙ্গি গুলশানের ঘটনায় এসেছে। ভেতরে সাইফুল কাজ করতো। এই গ্রুপের সঙ্গে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগাযোগ ছিল কি না- সেটি তদন্ত শেষ না হলে বলতে পারছি না।
বিবার্তা/আমিন/রয়েল