জবির মূল দাবি পুরান ঢাকায় এক খণ্ড জমি। বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতি বলা হয়, শূন্য আবাসন ব্যবস্থা সম্বলিত দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ বিশ্ববিদালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতি বছরের মত এবারও দীর্ঘদিন ধরে হলের জন্য আন্দোলন করে আসছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি মাঝে মাঝে জনদুর্ভোগও সৃষ্টি হচ্ছে। কাছাকাছি কোনো খালি জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গাটি বরাদ্দ করার জন্য ছাত্ররা দাবি জানায়।
এ জায়গায় কী করা হবে তা বিস্তারিতভাবে জানা না থাকায় এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরের ভিত্তিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে জানানো হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতার স্মৃতি রক্ষার্থে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যে সব স্থাপনা তৈরি করা হবে এবং পরবর্তীতে এখানে যে সব অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করা হবে তা করার সক্ষমতা অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশি রয়েছে। তাই ঢাকা কেন্দ্র্রীয় কারাগারের জায়গা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ করার জন্য সরকারকে একাডেমিক কাউন্সিল আবেদন জানায়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, পুরান ঢাকাবাসী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এর বিরোধিতা করছে। পুরান ঢাকা শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সাথে এলাকাবাসীর পাল্টা-পাল্টি অবস্থান একেবারেই কাম্য নয়। ঐতিহ্যগতভাবেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তথা সাবেক জগন্নাথ কলেজের সাথে পুরানো ঢাকাবাসীর সম্পর্ক নিবিড় ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
এখানে উল্লেখ্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যদিও পুরান ঢাকার কেন্দ্র্রীয় কারাগারের জায়গাটি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে, তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল দাবি একখণ্ড জমি পাওয়া।
বিবৃতিতে জবি প্রশাসন আরও উল্লেখ করেছে, আমরা বহুবার বলেছি, বেদখল হওয়া হল (পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হিন্দুদের ছোট ছোট পরিত্যক্ত বাড়ি) যা জগন্নাথ কলেজ থেকে ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ২০ বছর আগে ১৯৮৫ সালেই হাতছাড়া হয়ে যায়। ওইসব স্থাপনা পুনঃদখল করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের কাজ বা দায়িত্ব হতে পারে না। এগুলো পুনরুদ্ধার করে মালিকানা সত্ত্ব বিশ্ববিদ্যালয়কে হস্তান্তর করা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্ব। জায়গার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির উন্নয়ন বিশেষ করে আবাসন চরম সংকটের মধ্যে আছে। এই সংকট উত্তরণের নিমিত্তে সরকারের সুবিধাজনক স্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি জায়গার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানাচ্ছি ।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বর্তমানে ছাত্রীদের জন্য ১ হাজার আসনের একটি হল নির্মাণাধীন এবং ছাত্রদের জন্য আরো দুটি হল নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জায়গার ব্যবস্থা করার বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ মহল বিবেচনা করছে বলে আমাদের জানানো হয়।
এমতাবস্থায়, সরকারের সর্বোচ্চ মহলের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান শিক্ষার্থীদেরকে একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবার্তা/আদনান/কাফী