ঈদ মানেই আনন্দ। এ দিন সবাই চায় নতুন কাপড় আর সাজসজ্জায় নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে। ঘোরাঘুরি, ঘরোয়া ব্যস্ততা কিংবা আতিথেয়তার মধ্যেই ঈদের দিনের অধিকাংশ সময় কেটে যায়। সন্ধ্যা-রাতে ঈদের আনন্দ আরও বাড়ে। এসময়ও চলতে থাকে ঘরোয়া ব্যস্ততা, আতিথেয়তা, রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া বা কোনো পার্টির আমন্ত্রণ। এসবের মাঝে ঈদের সারাদিন আপনার সাজ কেমন হবে তা নিয়ে আজকের এই আয়োজন।
সকালের সাজ
ঈদের সব ব্যস্ততা সকাল থেকেই শুরু হয়। এসব ব্যস্ততার মাঝেও নিজের সাজটা ঠিক রাখা একটু কঠিন হয়ে যায়। এ দিন সকালে নিজেকে হালকা সাজের মাঝে ফুটিয়ে তোলাটাই হতে পারে বিশেষ আকর্ষণ। ফ্রেশ লুকের জন্য মেকআপ ও বাইরে রোদের কারণে সানগ্লাস ব্যবহার করা যেতে পারে। এ সাজটিতে সানগ্লাস ব্যবহারে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগবে। সাজটির সঙ্গে ডাস্ট পাউডারের ব্যবহারও যোগ করা যেতে পারে।
পোশাকের উপরই ঈদের সাজ সংশ্লিষ্ট। তাই পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে সাজটা যেন অন্যের রুচির সঙ্গে মিলে যায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
কাপড়ের সঙ্গে মিলিয়ে কালারফুল শ্যাডো, ম্যাচিং শ্যাডো বা নেইল পলিশ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে গর্জিয়াস পোশাক পড়তে চাইলে সাজের ক্ষেত্রে মেকআপটিও যেন গর্জিয়াস হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এ সাজের অংশ হিসেবে ব্রু-ফাউন্ডেশন, কনসোলার (মুখে কালো দাগ থাকলে), প্যানটেক বা প্যানটিফ যেটি আপনার সাজের সঙ্গে আসবে সেটিকেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে।
পারফেক্ট লুকের ক্ষেত্রে চুলের সাজটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই পোশাক ও ত্বকের সাজের সঙ্গে মিল রেখেই নিজে নিজে চুলের পারফেক্ট লুকটা তুলে ধরুন। এ দিন চুল ছেড়ে রাখাই ভালো। চাইলে স্টাইলিশ বিভিন্ন হেয়ার ক্লিপ দিয়েও চুলকে সাজিয়ে নিতে পারেন। আবার বিভিন্ন ঢঙেও চুলের খোপা বাঁধতে পারেন।
সাজে পারফিউম খুব সহজেই আমাদের মন দখল করে নেয়। তাই ঈদ আয়োজনের সাজে পূর্ণতা আনতে ও নিজেকে সতেজ-প্রাণবন্ত রাখতে সাজের সঙ্গে পারফিউমের ব্যবহারটাও গুরুত্ত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
বিকেলের সাজ
ঈদের দিনে বিকেলের সাজে শাড়ি পরতে চাইলে চুলে সুন্দর খোঁপা করতে পারেন। এজন্য ঈদের আগের দিন পার্লারে গিয়ে চুলের গ্লো-সেটিংসটা ঠিক করে নিতে পারেন। চুলটাকে চাইলে প্রিপেলিং করে বা কাঁটা দিয়েও বেঁধে দিতে পারেন। চুলের সাজে চাইলে শোভাবর্ধনকারী বিভিন্ন ফুল বা চুলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অর্নামেন্ট ব্যবহার করতে পারেন।
আর মেকআপের ক্ষেত্রে চাইলে ফাউন্ডেশন করে নিতে পারেন। সেই সঙ্গে ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক, চোখে কাজল, মাশকারা বা আইশ্যাডোও ব্যবহার করতে পারেন।
ঈদের কাপড়টা যদি গর্জিয়াস হয় তবে সাজের ক্ষেত্রে গয়নার ব্যবহার কম আনাই ভালো। এক্ষেত্রে কালো বা কোনো হালকা গয়নার ব্যবহারই আপনাকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলবে।
আবার ঈদের সাজে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করতে চাইলে কাপড়ের সঙ্গে মিল রেখে চোখ বা ঠোঁটকে একটু গাঢ় করে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। অর্থাৎ আপনার সাজের যেকোনো একটি বিষয়কে চাইলে বেশি প্রাধান্য দিতে পারেন। এর বাইরেও মাশকারা বা আইব্রুটাকেও গাঢ় করে তুলতে পারেন। যদি লিপস্টিকটা গাঢ় হয় তবে চোখের সাজটা হালকা করলেই ভালো দেখাবে।
ফাউন্ডেশনের বিষয়ে, ফাউন্ডেশনটি যেন হাত-পায়ের ত্বকের সঙ্গে মিল রেখেই করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
রাতের সাজ
রাতের সাজে চাইলে নিজেকে একটু বেশি গর্জিয়াস করে তোলা যেতে পারে। কেননা খুব সাধারণ সাজ এসময় মানাবে না। এক্ষেত্রে ব্লাশানটা একটু বাড়িয়ে, চোখের কাজলটাকে একটু গাঢ় করে নেওয়া যেতে পারে।
ঈদের গর্জিয়াস সাজে শ্যাডো ব্যবহার করতে চাইলে চোখে বিশেষ কোনো রঙের শ্যাডো ব্যবহার করা যেতে পারে। সাজের পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য দিতে চাইলে চোখে ৩/৪ রঙের লেয়ার কাজল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি আপনাকে অন্যদের থেকে ব্যতিক্রম করে রাখবে। এর পাশাপাশি চোখে মাশকারা, আইলাশ বা শেওলাশ ব্যবহার করা যেতে পারে।
চুলের সাজের ক্ষেত্রে চুল পাইল করে রাখতে পারেন। আবার চাইলে কিছু চুল সামনে নিয়ে টুইস্ট করেও আটকে রাখতে পারেন। চুলের এমন সাজে নিজেকে একটু গর্জিয়াসই মনে হবে। তবে রাতের সাজ আয়োজনের পোশাকটি হতে পারে কালো রঙের বা অন্য কোনো উজ্জ্বল রঙের পোশাক।
বিবার্তা/জাকিয়া/যুথি