নারীর মোহনীয় শরীরকে আরও আকর্ষণীয় হিসেবে উপস্থাপন করতে মিডিয়ার যে ভূমিকা আছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু নারীর শরীর কেন পুরুষের তুলনায় এতো বেশি আকর্ষণীয়? এ প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায় ‘Curvology’ বইটিতে।
Curvology এর লেখক ডেভিড বেইনব্রিজ নারী ও পুরুষের শরীরের ওপর বিবর্তনের প্রভাবকেই মূলত তুলে ধরেন এই বইতে। কখনো কি ভেবে দেখেছেন, পুরুষের তুলনায় নারীর শরীর এতোটা ‘কার্ভ’ কেন প্রকাশ করে? এই বইটিতে তুলে ধরা ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সন্তান ধারণ ও প্রতিপালনের জন্যই পুরুষ এবং নারীর শরীরে এমন অমিল।
ব্রিটিশ ভেটেরিনারি অ্যানাটমিস্ট এবং রিপ্রোডাক্টিভ বায়োলজিস্ট বেইনব্রিজ ব্যাখ্যা করেন, মানবসভ্যতার টিকে থাকা নিশ্চিত করতেই নারীর শরীর এমন সুগঠিত। কারণ নারীর শরীরে সহজাত ভারী নিতম্ব ও সুগঠিত স্তন থাকার অর্থ হলো তিনি ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী এবং সন্তান ধারণের জন্য উপযোগী জিন ধারণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ কারণেই বয়স বাড়ার সাথে সাথে নারীর শরীরে পরিবর্তন আসে। একই কারণে নববিবাহিত বা প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর পর নারী ও পুরুষ উভয়ের শরীরে পরিবর্তন আসে, যাতে সন্তান ধারণ ও প্রতিপালনে নারীর সমস্যা না হয় এবং পুরুষ তাকে সহায়তা করতে পারেন।
অনেকের জন্য এই বইটি পড়তে অস্বস্তি লাগতে পারে। কারণ অনেকেই ভেবে থাকেন যে প্রেম-ভালোবাসার জন্য শারীরিক অবয়বের চাইতে মনের মিল বেশি জরুরি। কিন্তু যে সময় থেকে মানুষ একে অপরের শারীরিক সংসর্গ কামনা করে আসছে, সে সময় থেকেই রয়ে গেছে এসব প্রবৃত্তি। মানুষের মাঝে যতই উন্নতি আসুক না কেন, একেবারে আদিম এই আকর্ষণ এড়ানো সহজ নয়।
নারীর শরীর হৃষ্টপুষ্ট হবে, এটাই যদি বিবর্তনের লক্ষ্য হবে তাহলে কিছু কিছু নারীর মাঝে ইটিং ডিজঅর্ডার কেন দেখা যায়? এর মাধ্যমে তারা নিজেদেরকে আরও ছিপছিপে করে তুলতে চান কেন? এসবের উত্তরও দেবার চেষ্টা করেন বেইনব্রিজ। কৃষির আবিষ্কারের আগে মানুষ কিছু সময়ে প্রচুর খাবার পেতো আর কিছু সময় একেবারে না খেয়ে থাকতো। কিছু কিছু প্রাণী আছে যারা এখনো শীতকালে খাদ্য গ্রহণ একেবারে বন্ধ করে দেয়। বিবর্তনের ধারায় এই প্রবৃত্তিটাও অনেকের মাঝে থেকে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়।
বইটি পড়তে গিয়ে তার কিছু কিছু ব্যাখ্যা একেবারে অদ্ভুত মনে হতে পারে। যেমন তার মতে, পোশাকআশাক শুধু আমাদের আবরণ হিসেবেই নয়, বরং আমাদের মনস্তত্ত্ব প্রভাবিত করতেও অনেক কার্যকরী।
বিবার্তা/জিয়া