আমরা প্রতিদিন কিছু না কিছু ফাসফুড খেয়ে থাকি যা শরীরকে ফুলিয়ে তোলে। এতে নিজেকে দেখতেও বাজে দেখায়। অথচ আকর্ষণীয় ফিগার কে না চায়? অনেকেই শত চেষ্টা করেও ফিগার সুন্দর বানাতে পারে না। আবার ওজন কমানোর চিন্তায় ঘুম হারাম হয়ে যায়। তাদের জন্য এবার গবেষকরা জানান, কতগুলো খাবার আছে যা নিয়মিত খেলে ওজন আর বাড়বে না, বরং কমবে। যেসব খাবার নিয়মিত খেলে ওজন কমবে আমরা সেগুলোর নাম জেনে নেই।
দারুচিনি: ওজন কমাতে দারুচিনি সবচেয়ে বেশি উপকারী। এটি শরীরের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিন নিয়ম করে দারুচিনি খেলে খিদে কমে যায় এবং মেদও গলতে শুরু করে। পেটের রোগ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড, যক্ষ্ণা এবং ক্যান্সারেও দারুচিনি বেশ উপকারী। এক থেকে চার চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো বিপাকে দ্রুত ভূমিকা রাখে, যা শরীরে সামগ্রিকভাবে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
আদা: ওজন কমাতে আদার জুড়ি নেই। গবেষকরা জানান, ডায়বেটিসের সমস্যাতে আদা খাওয়া খুব ভালো। পেট পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও এটি উপকারী। আদা পাচনতন্ত্রে জমে থাকা খাবার পরিষ্কার করে। চর্বি কম জমার ফলে ওজনও বাড়ে না।
লাল মরিচ: লাল মরিচে ক্যাপসিক্যাম নামে যৌগ থাকে, যা ওজন কমানোর সাথে সাথে খিদেরও নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণায় জানা গেছে, লাল মরিচ মেটাবলিজম বাড়ায়, ফলে বেশি ক্যালরি বার্ন হয়।
জিরা: বদহজম, পেট ফোলা এবং খাবারে অরুচি হলে জিরা খাওয়া ভালো। পাইলস হলে মিছরির মধ্যে জিরা মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। জিরা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত জিরা খাওয়ার ফলে ওজন কমে যায়।
নারকেল তেল: গবেষকের গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মহিলা ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন দুই টেবিল চামচ করে নারকেল তেল খান তাদের তলপেটের চর্বি কমে মেটাবলিজম বাড়ায়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক মাছ বিশেষ করে স্যামন বা টুনা মাছ মেদ কমানোর জন্য খুবই উপযোগী। এসব সামুদ্রিক মাছে থাকে ওমেগা তিন ফ্যাটি এসিড। এ এসিড মেদ বৃদ্ধিতে দায়ী চর্বিকে পোড়াতে এবং শরীরে ভালো চর্বির পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। ফলে সামুদ্রিক মাছ থেকে যে ফ্যাট পাওয়া যায়, তার নাম ‘পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট’। তাই বাদাম ও জলপাই তেলের মতো সামুদ্রিক মাছের ফ্যাটও ওজন কমাতে অনেক ভূমিকা রাখে।
সবুজ চা: সবুজ চা ওজন কমাতে খুব সাহায্য করে। এর প্রতিটি দানায় রয়েছে মানুষের শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক পলিফেনল ও কোরোজেনিক এসিড। এটি হজম ক্ষমতা বাড়ায় যা শরীরের ওজন কমানোর প্রধান শর্ত হিসেবে কাজ করে।
কুসুমবিহীন ডিম: সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালের নাশতায় ডিম খেলে তা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ভিটামিন বি১২, যা দ্রুত চর্বি কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত যারা ডায়েট করেন, তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটি করে ডিম রাখতে পারেন। তবে ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলবেন।
অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল হলো ৮৫ শতাংশ অয়েলিক অ্যাসিড, যা পরিপাক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে থাকে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চামচ অলিভ অয়েল খাওয়ার অভ্যাস করলে তা শরীরে মেটাবলিজম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। যা আপনার ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে।
লেবু: লেবু শরীরের মেদ কমাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। গরম পানিতে লেবুর রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া ওজন কমানোর জন্য একটি কার্যকরী উপায় হিসেবে কাজ করে।
যব: যবে রয়েছে প্রচুর ফাইবার, যা দ্রুত ওজন কমাতে পারে। তাই যারা ওজন নিয়ে খুব বেশি সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রতিদিনের নাস্তায় যব খেতে পারেন।
আপেল: আপেলে চার-পাঁচ গ্রাম ফাইবার আছে যা চর্বি কমাতে পারে। এটি ক্ষুধা কমাতেও সাহায্য করে।
আখরোট: আখরোটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-তিন ফ্যাট আলফা-লিনোলেনিক এসিড যা দেহের মেদ কমতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
ইসবগুল: ইসবগুলে রয়েছে মিউসিলেজ ও হলোসাইড প্ল্যানটিওসসহ বিভিন্ন ধরনের এমাইনো এসিড। এসব এসিড আমাশয় দূর করে এবং প্রতিরাতে রাতে ঘুমানোর আগে ইসবগুল খেলে ওজন অনেকটাই কমে যাবে।
এলাচ: এতে রয়েছে টর্পিন, টর্পিনিনোল, সিনিওল, টর্পিনিল এসিটেট নামক রাসায়নিক যা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
মৌরি: মৌরি খেলে পাচনতন্ত্র আরও ভালো হয় এবং খিদেও নিয়ন্ত্রণে থাকে ফলে ওজন কমে যায়। এছাড়া মৌরি লিভার পরিষ্কার রাখে।
বিবার্তা/জেমি/জিয়া