অনেকেই বলেন, মেয়েদের পেটে কোনও কথা থাকে না। অর্থাৎ তারা কোন গোপন কথা গোপন রাখতে পারেন না।
লিঙ্গ-বৈষম্য বিরোধী যারা, তারা অবশ্যই মেয়েদের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগে আপত্তি তুলবেন। কিন্তু সত্যিই কি মেয়েরা কোনও গোপন কথা নিজেদের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে অক্ষম?
যদি এই প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ হয়, তাহলে ওঠে দ্বিতীয় প্রশ্ন, কেন মেয়েদের এই বিশেষ অক্ষমতা?
বিজ্ঞানও বলছে, মেয়েদের মধ্যে কথা গোপন করার ক্ষমতা পুরুষদের তুলনায় কম। ব্রিটিশ ত্বক পরিচর্যা বিষয়ক কোম্পানি সিম্পল একটি সমীক্ষা চালায় এই বিষয়ে। তা থেকে দেখা যায়, মেয়েরা কোনও একটি গোপনীয় কথা ৩২ মিনিটের বেশি গোপন রাখতে পারে না। সেই জায়গায় একজন পুরুষ একটি কথা প্রায় ৫৪ মিনিট গোপন রাখতে সক্ষম।
কিন্তু কেন মেয়েদের এই বিশেষ প্রবণতা?
আমেরিকার টাফটস বিশ্ববিদ্যালের গবেষকরা মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছিলেন। তারা বলছেন, আধুনিক যুগের আগমনের আগে পর্যন্ত মেয়েরা ছিলেন মূলত গৃহজীবনে আবদ্ধ এবং মূলত মেয়েদের সঙ্গেই তাদের মেলামেশা হত। আর অধিকাংশ গুহ্যকথাই যেহেতু প্রধানত মানুষের গৃহজীবন বা ব্যক্তিজীবনকেন্দ্রিক হয়, সেহেতু গৃহ পরিবেশে আবদ্ধ মেয়েদের মধ্যে অন্যদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনাটাও বেশি হত।
সেখানে একটি গোপন কথা ফাঁস করতে পারলে অন্যদের চোখে একটা বিশেষ মর্যাদা পাওয়া যেত। কারণ যিনি সেই গোপন কথাটি জানেন, একান্তভাবে তিনিই কেবল কথাটি প্রকাশ্যে আনার অধিকারী। ফলে মহিলারা অন্যদের সামনে কোনও গুহ্যকথা ফাঁস করে বিশেষ তৃপ্তি বোধ করতেন। আধুনিক মহিলারাও নিজেদের অজান্তে সেই মানসিকতারই উত্তরাধিকার বহন করে চলেছেন।
তা বলে পুরুষরা যে একেবারে ধোয়া তুলসিপাতা, তা নয়। টাফট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এটাও দেখেছেন যে, অন্যদের বা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কৌতূহল পুরুষদের মধ্যেও যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে।
তবে গোপন কথা গোপনে রাখার ব্যাপারে পুরুষদের মধ্যে একটা স্বাভাবিক নৈতিক বোধ কাজ করে। সেই নীতিবোধের তাগিদেই গোপন কথা তাঁরা চট করে ফাঁস করতে চান না।
তবে সমীক্ষকরা এটাও দেখেছেন, পেটে দু’ প্যাগ মদ পড়লেই অনেক পুরুষ গড়গড় করে বলতে শুরু করেন গুহ্যকথা। অ্যালকোহলের প্রভাব গোপনীয়তা সম্পর্কে তাদের স্বাভাবিক নীতিবোধকে সাময়িকভাবে অকেজো করে দেয় বলেই এমনটা ঘটে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
বিবার্তা/জিয়া