শিশুর পর হবিগঞ্জে পঞ্চায়েতের বিরোধের শিকার হলো কিশোর। দুই পঞ্চায়েতের আধিপত্যের কারণে লিটন মিয়া (১৩) নামে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার উচাইল চারিনাও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর ওই গ্রামের তাউছ মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় রিংকু মিয়া নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের স্বজনদের দাবি, পুলিশের সামনেই তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে সদর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন জানান, ঘটনার আগে ও পরে পুলিশ সেখানে থাকলেও ঘটনার সময় তারা ছিলেন না। পুলিশ যাওয়ার আগেই প্রতিপক্ষের লোকজন লিটনকে পিটিয়ে আহত করে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার উচাইল চারিনাও গ্রামের বাসিন্দা উচাইল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জহুর আলী এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর চৌধুরী শাহীনের পঞ্চায়েতের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। আর এ নিয়ে তাদের মাঝে একাধিকবার হামলা সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। গ্রামের পার্শ্ববর্তী নদী থেকে মাটি উত্তোলন নিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি উভয়পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়। এতে এক পঞ্চায়েতের প্রধান জহুর আলী নিহত হন।
এ ব্যাপারে নিহত জহুর আলীর ছেলে ইউপি সদস্য আব্দুল আওয়াল বাদী হয়ে ৯৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘটনার পর গ্রেফতার আতঙ্কে শাহীনের পক্ষের ৬১টি পরিবার বসতবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ সুযোগে আসামিদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ মামলার আসামি করা হয় তাউছ মিয়ার ১৩ বছর বয়সী ছেলে লিটন মিয়াকেও।
সম্প্রতি লিটনসহ মামলার বেশ কয়েকজন আসামি আদালত থেকে জামিন নেয়। এরই মধ্যে বাদীপক্ষের লোকজনের বাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগে ২১ এপ্রিল সদর থানায় তাদের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করা হয়।
অন্যদিকে, চলতি মৌসুমে জমির ধান কাটতে বাড়িতে যায় আসামিপক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাদী আব্দুল আওয়াল ও তার ভাই জামিল মিয়া পুলিশকে বিষয়টি জানান।
বিকেলে সদর থানার এসআই সুমন হাজরার নেতৃত্বে পুলিশ আসামিদের বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশের সঙ্গে সেখানে যায় জহুর আলীর ছেলে জামিল মিয়াসহ বাদীপক্ষের লোকজন। একপর্যায়ে পুলিশকে বাড়ির উঠানে রেখে তারা তাউছ মিয়ার ঘরে ঢুকে তার ছেলে লিটন মিয়াকে বেধড়ক মারপিট করে। এতে সে গুরুতর আহত হলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর রাত ১১টায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বিবার্তা/ডিডি/ইফতি/কাফী