সাঁওতাল বিদ্রোহের ১৬১ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। অধিকার আদায়ের জন্য ১৮৫৫ সালের এই দিনে ব্রিটিশ ও জমিদারদের বিরুদ্ধে সাঁওতালরা যুদ্ধ শুরু করেছিল। প্রায় দেড় বছর যুদ্ধ শেষে তারা পরাজিত হয়েছিল।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, আজ থেকে ১৬০ বছর পূর্বে ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন তারিখে সাওতাল সম্প্রদায়ের চার ভাই সিদু-কানহু-চান্দ ও ভাইরোর নেতৃত্বে সাঁওতালরা সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ সৈন্য ও তাদের দোসর অসৎ ব্যবসায়ী, মুনাফাখোর ও মহাজনদের অত্যাচার, নিপীড়ন ও নির্যাতনের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করা।
মহাজন, দালাল, জমিদার কর্ত্তৃক নিরীহ ও সরল উপজাতিদের শোষণ ও নির্যাতনে পরোক্ষ মদদ দিতো ব্রিটিশ সৈন্য বাহিনী। এ কারণে তারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে তা শেষ হয়।
সাওতাঁলরা তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করলেও ইংরেজ বাহিনীর হাতে ছিলো বন্দুক ও কামান। তারা ঘোড়া ও হাতি যুদ্ধে ব্যবহার করেছিল। এ যুদ্ধে ইংরেজ সৈন্যসহ প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা মারা যায়।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবল উপজেলার চা বাগানগুলোতে সাঁওতালদের বসবাস। তারা ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহের চেতনা এখনও লালন করে দিবসটি পালন করে। তাদের প্রত্যাশা যে অধিকার আদায়ের জন্য তাদের পূর্ব পুরুষ রক্ত দিয়েছিলেন সেই অধিকার একদিন আদায় হবেই।
চুনারুঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের জানান, আমার উপজেলা সবচেয়ে বেশী সাঁওতাল রয়েছে। এছাড়াও অনেক নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাস এই উপজেলায়। চা শ্রমিক হিসাবে তারা যে মজুরী পায় তা অবশ্যই কম। তবে তাদের মধ্যে সচেতনতার অবাব রয়েছে। বর্তমানে তারা আরও সচেতন হচ্ছে এবং লেখাপড়ার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। এক সময় তারা আরও ভাল অবস্থায় চলে যাবে। সরকারের সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তাদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষে চানপুর চা বাগানে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ইন্ডিজিনিয়াস সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অব অর্গানাইজেশন।
বিবার্তা/জিয়া