শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর বিধবাপল্লির জরিতন বেগম (৭৮) আর নেই। নানা রোগ-শোকে ভোগার পর রবিবার রাতে নালিতাবাড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি মারা যান। সোমবার দুপুরে নিজ গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই সোহাগপুর গণহত্যায় তার স্বামী খেজুর আলী, বড় ছেলে আবুল হোসেনসহ পরিবারের পাঁচ সদস্যকে পাকিস্তানি হানাদাররা হত্যা করে। এসময় জরিতনও নির্যাতনের শিকার হন।
মুক্তিযুদ্ধের বহু বছর পর কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর প্রচেষ্টায় তিনি প্রতি মাসে ১৭০০টাকা ভাতা পেতেন।
সম্প্রতি সরকার বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেন। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলা প্রশাসন সোহাগপুরের বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য যাচাই-বাছাই শুরু করে। যাচাই-বাছাই শেষে জরিতন বেগমের নামসহ উপজেলার ৫ বীরাঙ্গনার নাম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। পরে মন্ত্রণালয় ৪জন নারী বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু সেই তালিকায় জরিতন বেগমের নাম ছিলো না।
জরিতন বেগমের ছোট ছেলে আজগর আলি জানান, আমার একটাই কষ্ট। আমার মাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
জরিতন বেগমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে কাকরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ তালুকদার বলেন, আশা করি তিনি তার প্রাপ্য সম্মানটুকু পাবেন।
উপজেলার বীরাঙ্গনা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাজেদা আরফিন জানান, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় আমাকে পাঁচ জনের নামের তালিকা দেন। আমি যাচাই-বাছাই করে পাঁচ জনের নামের তালিকাই মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।
বিবার্তা/সানী/নাজিম