বরিশালের মুলাদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মনির হোসেন রাঢ়ীকে হত্যার দায়ে পিতা-পুত্রকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সুদিপ্ত দাস এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মুলাদী পৌর শহরের বাসিন্দা আলাউদ্দিন রাঢ়ী ও তার ছেলে রাসেল রাঢ়ী।
মনির রাঢ়ী আলাউদ্দিন রাঢ়ীর আপন চাচাত ভাই এবং একই বাড়ির বাসিন্দা। মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আলাউদ্দিন রাঢ়ীর বড় ছেলে সোহাগ রাঢ়ীকে খালাস দেন আদালত।
বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন কাবুল মামলার নথির বরাত দিয়ে জানান, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর মুলাদী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দলিল উদ্দিন মাস্টার ও আনোয়ারদের বাড়ির চলাচলের পথ বন্ধ করতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছিলেন আলাউদ্দিন রাঢ়ী ও তার ছেলেরা। এ সময় তারা বিষয়টি প্রতিবেশি সাংবাদিক মনির রাঢ়ীকে জানান। মনির রাঢ়ী ঘটনাস্থলে এসে প্রতিবেশিদের চলাচলের পথে প্রাচীর নির্মাণ না করতে আলাউদ্দিন রাঢ়ীসহ অন্যদের অনুরোধ জানান। এতে আলাউদ্দিন রাঢ়ীসহ অন্যরা মনির রাঢ়ীর সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। পরে এক পর্যায়ে আলাউদ্দিন রাঢ়ীর হুকুমে রাসেল রাঢ়ী হত্যার উদ্দেশে মনির রাঢ়ীর মাথায় কোদাল দিয়ে কোপ দেস এবং সোহাগ রাঢ়ী হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। পরে গুরুতর আহত মনিরকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে আনা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা নেয়ার পথে মনির মারা যান।
এ ঘটনায় ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর নিহত মনিরের ভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে মুলাদী থানায় আলাউদ্দিন ও তার দুই ছেলে সোহাগ ও রাসেল এবং স্ত্রী আলেয়া বেগম ও প্রতিবেশি মোতালেব রাঢ়ীকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। ২০১১ সালের ১৭ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. কায়কোবাদ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন। ২০১৪ সালের ২ জুলাই মামলার আসামি মোতালেব মারা যান। ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আলেয়া বেগমকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আলাউদ্দিন ও তার দুই ছেলে সোহাগ ও রাসেলের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ গঠন করে আদালত। ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত ওই রায় দেন।
মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে পিপি গিয়াস উদ্দিন কাবুল বলেন, সরকার যেন এই রায় দ্রুত কার্যকর করেন।
তবে দণ্ডিতদের পক্ষে আইনজীবী মোকলেসুর রহমান খান জানান, আসামিরা ন্যায় বিচার পাননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
বিবার্তা/আমিন/রয়েল