পিরোজপুরের কাউখালীর কচা সন্ধ্যা ও কালিগঙ্গা নদীতে ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে। জেলেরা দিনরাত জাল ফেললেও ধরা পড়ছে না মাছ। ফলে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। একে তো ঋণের জালে জর্জড়িত, অন্যদিকে ইলিশ না পাওয়ায় জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে বিরাজ করছে মহাজনী ঋণ পরিশোধের আতংক।
কাউখালীতে ১২ হাজারেরও বেশি ইলিশ জেলে পরিবার রয়েছে। এসব জেলে বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল কিনে নদীতে নেমেছে। কিন্তু সারাদিন জাল ফেলেও মাছ না পাওয়ায় তারা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে। হতাশ হয়ে অনেকেই নদীতে না গিয়ে তীরে নৌকায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন।
অন্যকোনো আয়ের উৎস না থাকায় বেকার হয়ে পরেছেন উপজেলার হাজার হাজার জেলে। বেশিরভাগ জেলে আবার ব্যাংক ও এনজিও ঋণের কিস্তির ভয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন না। তাদের পরিবারের সদস্যরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।
সরেজমিনে জেলেপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, জেলেদের স্বজনরা অভাবের তাড়নায় দিশেহারা হয়ে পরেছেন। তারা জানান, বিভিন্ন এনজিও ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, বিআরডিবি থেকে আনা ঋণের টাকা প্রতি সপ্তাহে পরিশোধ করতে হয়। সংসার চালাতে পারছেন না কিস্তি দেবেন কিভাবে। দুঃশ্চিন্তায় তাদের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার প্রায় ১১শ’টি জেলে পরিবার সরকারি সাহায্য পেলেও তা মোট জেলের তুলনায় সামান্য।
কাউখালীর এলাকার জেলে বাদল মুন্সী, ফোরকান মাঝি, কাওসার জানান, তাদের একমাত্র পেশা ইলিশ ধরে বিক্রি করা। নদীতে ইলিশ মাছ না পেয়ে তারা হতাশ। সরকার সহজ শর্তে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে ঋণ দিলে আমরা এই করুণ অবস্থা থেকে রেহাই পাব।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা জানান, উপজেলার জেলেদেরকে পুনর্বাসনের জন্য চার মাসের জন্য প্রতি মাসে ৪০ কেজি চাল দেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কাউখালীর কচা নদীর সুস্বাদু ইলিশ কাউখালীর চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি করা হতো। এমনকি ভারতের জামাইষষ্ঠী অনুষ্ঠানে কচা নদীর ইলিশ খুব জনপ্রিয় ছিল। বিশেষজ্ঞদের ধারনা, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না।
বিবার্তা/বশির/নিশি