পিরোজপুরের কাউখালীতে আমড়ার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। মৌসুমে বাজার ছাড়াও পথে পথে প্রচুর বিক্রি হয় আমড়া। অর্থকরী ফল হিসেবেও নিজের জায়গা করে নিয়েছে এটি। ফলে বেড়ে গেছে আমড়ার চাষ ও উত্পাদন। কাউখালী উপজেলায় চলতি মৌসুমে গত দুই বছরের তুলনায় আমড়ার ফলন কম হলেও চাষীরা দাম বেশির কারণে খুশি।
দেশজুড়ে বরিশালের আমড়ার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। মূলত বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলাসহ স্বরুপকাঠী ও নাজিরপুরে আমড়া আবাদ হয় বেশি। ওই এলাকায় সব বাড়িতেই আমড়া গাছ দেখতে পাওয়া যায়। রাস্তার পাশে, বাড়ির উঠোনে একটি আমড়া গাছ লাগানো যেন প্রতিটি মানুষের নেশায় পরিণত হয়েছে।
অনেকেই ফসলি জমিতে বাণিজ্যিকভাবে আমড়ার বড় বড় বাগান করেছেন। কোনো-কোনো চাষীর বাগান থেকে বছরে লাখ লাখ টাকা আয় হয়।
শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে পরিপক্ব আমড়া পাওয়া যায়। গ্রামের বেশিরভাগ এলাকায় আমড়া কেনাবেচার বেপারী রয়েছে। তারা ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আমড়ার কুঁড়ি দেখেই আগাম টাকা দিয়ে বাগান কিনে ফেলেন। আবার অনেক চাষী ভরা মৌসুমে নিজেরাই বাজারে আমড়া বিক্রি করেন।
আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত গাছ থেকে আমড়া পেড়ে বাজারে নিয়ে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করা হয়। কাউখালী উপজেলার প্রধান বন্দর লঞ্চঘাট, দক্ষিণ বাজার, পাঙ্গাশিয়াসহ বিভিন্ন বড় বাজারে রয়েছে আমড়ার আড়ত। ওইসব আড়তে বেপারীদের কাছ থেকে আমড়া কিনে ঢাকা, চাঁদপুর, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও মেঘনাঘাট এলাকায় চালান করা হয়। সেখানে আড়তদাররা বিভিন্ন মোকামের খুচরা বিক্রেতা ও পাইকারদের কাছে আমড়া বিক্রি করেন।
কাউখালী এলাকার আমড়া চাষী জাকির হোসেন জানান, মধ্যস্বত্ত্ব ভোগীদের অধিক মুনাফার কারণে আমড়া উত্পাদনকারী চাষীরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বেপারীরা গৃহস্থদের কাছ থেকে এক বস্তা আমড়া ১১/১২শ’ টাকায় কিনে কাউখালী মোকামে বিক্রি করেন ১৩শ’ থেকে ১৪শ’ টাকায়।
কাউখালী উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ কর্মকর্তা অপূর্ব লাল সরকার জানান, নিঃসন্দেহে আমড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। এ বছর কাউখালীতে আমড়ার ফলন ভালো হয়েছে। এর বাগান করা বা চাষ করা খুবই সহজ।
বিবার্তা/বশির/নিশি