পাবনা জেলার চাটমোহরে বয়ে চলা এককালের স্রোতবাহী বড়াল নদীর নাব্য ফিরিয়ে দিতে ক্রসবাঁধ অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন আন্দোলনের পর বর্তমান সরকার বড়াল নদীর উপর নির্মিত ক্রসবাঁধ অপসারণের কাজ শুরু করেছে। রবিবার পানি উন্নয়ন বোর্ড চাটমোহরের বোথর ঘাটের ক্রসবাঁধ অপসারণের কাজ শুরু হয়।
উল্লেখ্য, পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েক দশক আগে চাটমোহরের নতুন বাজার খেয়াঘাট, বোথরঘাট ও রামনগরঘাটে বড়াল নদীর উপর ৩টি ক্রসবাঁধ ও দহপাড়ায় একটি স্লুইসগেট নির্মাণ করে। এ নদীর উজানে রাজশাহীর চারঘাটেও একটি স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইসগেট ও ক্রসবাঁধ নির্মাণের কারণে বড়াল নদী শুকিয়ে যেতে থাকে।
নদীর মধ্যে ধান আবাদ হতে থাকে। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বড়ালের দু’পারের লাখ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। নদীদখল করে বাড়িঘর ও দোকানপাট নির্মাণ করা হয়। এই নদীটির নাব্য ফিরিয়ে আনতে বড়াল নদী রক্ষা কমিটি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল। নদী তীরের সচেতনতা সৃষ্টিতে বড়াল রক্ষা কমিটি ২’শ কিলোমিটার মানববন্ধন, সভা সমাবেশ করে।
গত বছরের ১৪ মার্চ গণসমাবেশের মাধ্যমে এক লাখ গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। নদীটি রক্ষায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি উচ্চ আদালতে করা রিট পিটিশনের নির্দেশনা ও টাস্কফোর্সের সুপারিশের আলোকে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ২০১৫ সালে ৯ জুন চাটমোহরের বড়াল নদীর উপর নির্মিত ক্রসবাঁধ পরিদর্শন শেষে বাঁধ অপসারণের নির্দেশনা দেন।
২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও নৌপরিবহন মন্ত্রী ক্রসবাঁধ পরিদর্শনে আসেন। এরপর সরকার নদীটি সচলে ক্রসবাঁধ অপসারণে সিদ্ধান্ত নেন।
বড়াল নদী রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব এসএম মিজানুর রহমান জানান, শুধু চাটমোহরের ক্রসবাঁধ অপসারণ করলেই নদীটি সচল হবে না। রাজশাহীর চারঘাটের স্লুইসগেট ও অন্যান্য ক্রসবাঁধ অপসারণও করতে হবে। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিবার্তা/কৃষ্ণ/জেমি/জিয়া