যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের ভিজিএফ এর ৯০০ কেজি চাল রবিবার বিকেলে পাচারকালে জনতা আটক করেন। পরে প্রশাসনের উপস্থিতিতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্রে তা ছেড়ে দেয়া হয়।
এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন মিয়ার আশু হস্তক্ষেপ কামনা ও সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পানিবন্দি সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, ইউপি সদস্য প্রকাশ চন্দ্র রায় ও ইকবালের যোগসাজসে রবিবার বিকেল ৪টার দিকে নসিমনে ভর্তি ১৮ বস্তা ভিজিএফ’র চাল বস্তা পরিবর্তন করে নওয়াপাড়া বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নেয়া হচ্ছিল।
ধোপাদী নূরানী মাদ্রাসার কাছে পৌঁছলে স্থানীয় জনতা ওই চাল আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ইউপি সদস্য ইকবাল নসিমন ভর্তি চাল অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়ে নওয়াপাড়া নূরবাগ ইজিবাইক স্ট্যান্ডে বিষয়টি নিয়ে গোপন বৈঠক বসেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চাল পাচারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে সক্ষম হয়েছে বলে সূত্রটি জানায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা পিআইও রিজিবুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষরকারী সুন্দলী ইউপি চেয়ারম্যান বিকাশ রায় জানান, তাদের ইউনিয়নে ভিজিএফ এর চাল অনেকে নিতে চায় না। এছাড়া অনেকে এ চাল বিক্রি করেছে প্রকাশ মেম্বরের কাছে। সেই চাল বস্তাবন্দি করে বাজারে নেয়া হচ্ছিল। এতে অপরাধ কোথায়?
অভিযুক্ত প্রকাশ মেম্বর বলেন, আমার সুন্দলী বাজারে দোকান আছে। সেই দোকানে গ্রামবাসী চাল বিক্রি করলে আমি তা কিনে নিই। সেই কেনা চাল বস্তায় ভরে নওয়াপাড়ায় বিক্রির জন্য পাঠাচ্ছিলাম মাত্র। অন্য কিছু নয়।
অভিযুক্ত ইকবাল মেম্বর বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। চেয়ারম্যান ও প্রকাশ মেম্বরের অনুরোধে আমি ঘটনাস্থলে যাই এবং না বুঝে এ বিষয়ে অগ্রসর হই। পরবর্তীতে বসাবসির মাধ্যমে প্রত্যয়নপত্র তৈরি হলে আমি তাতে স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করি।
নসিমনচালক ধোপাদী গ্রামের হাফিজুর বলেন, প্রকাশ মেম্বরের দোকান থেকে ১৮ বস্তা চাল লোড দেয়া হয়েছে, নওয়াপাড়ার এক আড়তে দেয়ার জন্য। এর বেশি কিছু আমি জানি না। তার সাথে একজন পথ প্রদর্শক ছিল, পুলিশ ও সাংবাদিক দেখে সে পালিয়ে গেছে বলে নসিমন চালক জানান।
অপরদিকে সুন্দলী গ্রামে আজ পর্যন্ত ভিজিএফের চাল পায়নি বা পরিমাণে কম পেয়েছে তাদের অভিযোগ, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বিকাশ রায় ও স্থানীয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রকাশ চন্দ্রের যোগসাজসে ভিজিএফের চাল পরিমাণে কম দিয়ে গোপনে বাজারে বিক্রি করার সময় জনগণ ধরে ফেলে। যারা পানিবন্দি অসহায় মানুষের চাল বিক্রি করছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ।
বিবার্তা/তুহিন/কাফী