এক নবজাতককে চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পর দাফনের ব্যবস্থা করতে গেলে শিশুটি কেঁদে উঠে। জানা গেছে, ফরিদপুর জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। আর শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন গাইনী চিকিৎসক ডা. রিজিয়া আলম।
চিকিৎসক রিজিয়া আলম সদ্যজাত শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে দাফনের ব্যবস্থা করতে বলেন পরিবারের সদস্যদের। এরপর কবরস্থানে দাফনের সময়ই কেঁদে উঠে মৃত ঘোষিত ওই শিশুটি।
ফরিদপুরের জেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসের উচ্চমান সহকারী মো. আবুল কালামের ছেলে নাজমুল হুদা জানান, তার পুত্রবধূ অ্যাডভোকেট নাজনীন আক্তারের (২৩) প্রসব বেদনা ওঠায় বুধবার রাতে তাকে প্রথমে শহরের আরোগ্য সদনে ও পরে রাত ১১টার দিকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ওই হাসপাতালে সিট না থাকায় তাকে দেখতে চাননি চিকিৎসক। এরপর হাসপাতালের ডক্টরস রুমের বেডেই রাত আড়াইটার দিকে একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হয়। জন্মের পরপরই জীবিত ওই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন ডা. রিজিয়া আলম।
এরপর ডা. রিজিয়া আলম একটি কার্টন বা ব্যাগ এনে নিয়ে যেতে বলেন ‘মৃত’ ওই শিশুকে। কথামতো আবুল কালাম একটি কার্টন এনে নাতিকে নিয়ে আলিপুর কবরস্থানে যান। সেখানে তখন দাফনের ব্যবস্থা না হওয়ায় একটি কবরের ওপর শুইয়ে রাখেন। সকালে তাকে শরিয়া অনুযায়ী দাফনের আগে ইমাম সাহেব শিশুটির মুখ কেবলামুখী রয়েছে কিনা তা জানতে চান। মুখ দেখতে কার্টন খোলার পরপরই কেঁদে ওঠে মৃত শিশুটি।
এদিকে, মৃত ঘোষণার পর বেঁচে ওঠা শিশুটিকে আবার শিশু হাসপাতালে আনার পরও তার চিকিৎসায় গাফিলতি দেখা গেছে। শিশুটিকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়নি। একটি লোহার বেডের ওপর রাখা হয়। সেখানেই নার্সরা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
পাশের কেবিনের রোগীর স্বজন কোহিনুর বেগম বলেন, প্রচণ্ড প্রসব বেদনা ওঠায় ডা. রিজিয়া আলম এসে বাচ্চাটির প্রসব করান। এরপর নবজাত শিশুটিকে তিনি মৃত ঘোষণা করেন।
কবরস্থানের ইমাম বলেন, সকালে দাফনের আগে তিনি বাচ্চার মুখ কেবলামুখী রয়েছে কিনা তা দেখতে কার্টনটি খুলতে বলেন। এরপর বাচ্চাটি কেঁদে উঠে।
এ ব্যাপারে ডা. রিজিয়া আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘জন্মের পর বাচ্চাটি কান্নাকাটি করেনি। পালসও পাইনি। এজন্য বলেছিলাম বাচ্চাটিকে নিয়ে যান। এটি একটি অলৌকিক ব্যাপার।’
বিবার্তা/জেমি/জিয়া