রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আকতার জাহান জলি আত্মহত্যা করেছেন গত ৯ সেপ্টেম্বর। আত্মহত্যার আগে তিনি একটি সুইসাইড নোট লিখে রেখে যান।
সুইসাইড নোটে জলি তার সাবেক স্বামী একই বিভাগেরই শিক্ষক তানভীর আহমদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে লেখেন, ‘সোয়াদকে (ছেলে) যেন ওর বাবা কোনোভাবেই নিজের হেফাজতে নিতে না পারে। যে বাবা সন্তানের গলায় ছুরি ধরতে পারে- সে যেকোনো সময় সন্তানকে মেরেও ফেলতে পারে বা মরতে বাধ্য করতে পারে।’
এরপর অনেকেই এ বিষয়টি নিয়ে জলির ছেলে আয়মান সোয়াদ আহমেদকে প্রশ্ন করেছেন। অবশেষে সোয়াদ মুখ খুলেছেন। সোমবার রাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সোয়াদ ফাঁস করে দিয়েছেন, বাবা তানভীর তার গলায় ছুরি ধরেছিলেন। আর এটি শুধু মায়ের সঙ্গে কথা বলার অপরাধে।
সোয়াদ তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘অনেকদিন ধরেই আমার কাছে ওই গলায় ছুরি ধরার ঘটনাটা জানতে চাওয়া হচ্ছে। আজকে বলেই দেই, কী ঘটেছিল ওইদিন।’
‘আম্মা আর আমি বাইরে যেতে চেয়েছিলাম আমার এক বান্ধবীর বাসায়। সারাদিন প্ল্যানিং করার পর আমি আব্বার কাছে অনুমতি চাইতে গেছিলাম। অনুমতি চাওয়ার সময় আব্বা বলেন, তোমার আম্মাকে বলো ওর মতো চলে যেতে। আমি তোমাকে দিয়ে আসব। আমি বললাম, আজব তো। আমি আর মা এই জিনিস প্ল্যান করছি। তুমি কেন ইন্টারফেয়ার করতেছ? আব্বা বলল, বাপ হিসেবে আমার এই অধিকার আছে। আমি বললাম, কিন্তু আম্মার সাথে প্ল্যান নষ্ট করার অধিকারও তোমার নাই। আব্বা বলে, মেইন থিং ইজ... তোমাকে ওই নারীর সাথে যেতে দেব না। গেলে আমার সাথে যাবা, না হলে নাই।’
‘আমি বলি, কি এমন করছে যে এত ক্ষতিকর মনে করো আম্মাকে? হ্যাঁ? আব্বা কিছু না বলে নিজের ঘরে চলে যায়। পরে বাধ্য হয়ে আম্মাকে ফোন দিয়ে বলি যে আমি যেতে পারব না আজকে। মা বলে, আমি বুঝছি কি হয়েছে। চিন্তা করিস না বাবা। আর কয়েকটা দিন।’
‘পরে সন্ধ্যায় আব্বাকে বলি, প্ল্যানটা নষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ। তখনই আব্বা বলে উঠে, তুই কি ঝগড়া লাগাইতে চাস? তোর আম্মার মতো হয়েছিস। আমি বলি, আমার আম্মার নামে এসব কথা বলবা না। খবরদার! আব্বা বলে তোর মায়ের সাথে কথা বন্ধ কর, এই কথাগুলাও বন্ধ হয়ে যাবে। আমি বলি বন্ধ করব না!’
‘আব্বা তখনই রান্নাঘরে গিয়ে একটা বড় চাকু নিয়ে এসে আমার গলায় ধরে বলে, কি বললি? শুনতে পাইনি। অল্পস্বরে বললাম, বন্ধ করব না। মেরে ফেলতে চাইলে মারো। আম্মাকে তো আমার সামনে মারার চেষ্টা করেছো। সিউরলি এটাও পারবে। আব্বা চাকুটা ছুঁড়ে মাটিতে ফেলে দিল। কিছু না বলে চল যায় ঘরে...।’
বিবার্তা/রিমন/নিশি
>> আকতার জাহানকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ