যশোরের অভয়নগর উপজেলার পানিবন্দি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জেএসসির (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) মডেল টেস্ট দিচ্ছে রাস্তায়, দোকান ঘরের বারান্দায়, ক্লাবঘরে ও বাড়ির ছাদের উপর।
উপজেলার ডুমুরতলা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে দোকান ঘরের বারান্দায়, খাটের উপর টুল দিয়ে ঠাসাঠাসি করে অতিকষ্টে শিক্ষার্থীরা জেএসসির মডেল টেস্ট দিচ্ছে।
পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা জানায়, যাতায়াতের ও বাড়িতে লেখা পড়ার সমস্যা রয়েছে। কিন্তু মাত্র এক মাস পরে জেএসসি ফাইনাল পরীক্ষা। যে কারণে কষ্ট উপেক্ষা করেই আমরা মডেল টেস্টে অংশ নিচ্ছি। শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, তাদের পরীক্ষার ফি ও খাতা সবই বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার বৈরাগী বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে দোকান ঘরের বারান্দায় পরীক্ষা নিচ্ছি। অভয়নগর শিক্ষক সমিতি আমাদের জন্য ফ্রি প্রশ্ন বিতরণ করেছে, আর আমরা খাতা ফ্রি দিয়ে এই পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করেছি।
উপজেলার সড়াডাঙ্গা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, আমরা একটি ক্লাব ঘরে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছি। হাটগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, রাস্তার উপর টিনে ছাবড়া বানিয়ে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে, কারণ একমাস পরে জেএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অভয়নগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার কথা চিন্তা করে উপজেলার পানিবন্দি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দেশ দেয়া হয়েছে- নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন রাস্তায়, দোকান ঘরে, বাড়ির বারান্দা ও ছাদে এবং পার্শ্ববর্তী ক্লাব ঘরে ক্লাস ও বিভিন্ন মডেল টেস্ট নেয়া যাবে। পানি না সরা পর্যন্ত এ ভাবেই চলবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, প্রায় ২ মাস হতে চলেছে অভয়নগরের প্রেমবাগ, সুন্দলী, চলিশিয়া ও পায়রা ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আর এ সকল ইউনিয়নের পানিবন্দি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অসহায় অবস্থায় যত্রতত্র জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
বিবার্তা/তুহিন/কাফী