সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শুভ মহালয়া। মা দুর্গা অসুর দমনের শুভশক্তি নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করবেন। তাকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের মৃৎশিল্পীদের। ইতিমধ্যে প্রতিমা গড়ার কারিগরেরা মাটির কাজ শেষ করেছেন। এখন রংতুলির খেলায় মেতে উঠেছেন তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে এ বছর মা দুর্গা ঘোটকে করে শান্তির বার্তা নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করবেন।
উপজেলা প্রশাসন ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানান, আগামী ৭ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন শুরু হতে যাচ্ছে। ১১ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে উৎসব সম্পন্ন হবে। এ বছর মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় পৌর সদরসহ ১৬ ইউনিয়নে ৭৭টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৯টি পূজামণ্ডপকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌর সদরের ৪, তেলিগাতী ৩, পঞ্চকরন ৪, পুটিখালী ২, দৈবজ্ঞহাটি ৩, রামচন্দ্রপুর ৫, চিংড়াখালী ৭, হোগলাপাশা ৭, বনগ্রাম ১৩, বলইবুনিয়া ৪, হোগলাবুনিয়া ২, বহরবুনিয়া ৩, জিউধরা ৬, নিশানবাড়ীয়া ৪, বারইখালী ৩, মোড়েলগঞ্জ সদর ১, খাউলীয়া ৬টি মণ্ডপে হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।
উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী হরিসভা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রতন কুমার সাহা ও সেরেস্তাদার বাড়ি নবারুণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা মিলন কুমার কর্মকার জানান, আনন্দ মুখর পরিবেশে মা দুর্গাকে বরণ করার সব প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে। কোন ধরনের ঝুঁকি এড়াতে প্রশাসনের সহায়তা নেয়া হবে।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পূজা উপলক্ষে সব বয়সের মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। ঘরে ঘরে আনন্দ জোয়ার বইতে শুরু করেছে। শান্তির দেবী মা দুর্গাকে বরণ করে নিতে কেউ কেউ মার্কেটে যাচ্ছে পূজার নতুন কাপড় কিনতে। বাজারে এক প্রকারের ধুম পড়েছে। পিঠা, খই, মুয়া, মুরি, নারু তৈরির জন্য নারিকেলসহ নানা উপকরণ কিনতে শুরু করেছেন পূজারিরা। অন্যদিকে অতিথি আপ্যায়নে ঘরে ঘরে চলছে সাজসজ্জা পরিপাটির কাজ।
থানার ওসি মো. রাশেদুল আলম জানান, শারদীয় দুর্গোৎসবে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে প্রতিটি মন্দিরে পুলিশ, আনসার, গ্রামপুলিশ ও ইউপি মেম্বরদের সমন্বয়ে গঠিত টিম অবস্থান করছে। এছাড়াও ৩ অক্টোবর থেকে পুলিশের দৃশ্যমান টিম ও একটি মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক প্রতিটি মন্দির পরিদর্শন করবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়েদুর রহমান জনান, হিন্দু সম্প্রদায়ের এই সর্ববৃহৎ উৎসবের সব প্রস্তুতি সম্পন্নের পথে। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে মণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রাখা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
বিবার্তা/রাজু/জেমি/জিয়া