বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানকে তুলোধুনা করা হয়েছে। বিচার বিভাগ নিয়ে প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলনে নেতিবাচক মন্তব্য করায় আইনজীবীরা পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এরপর বার কাউন্সিলের সদস্যরা তাদের প্রতিক্রিয়ায় এসপির মন্তব্যকে আদালত অবমাননার শামিল হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
রবিবার বিকেলে ১ নম্বর আইনজীবী সমিতি ভবনে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে সংবর্ধনা ও মতবিনমিয় সভায় এ তুলোধুনা করা হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল গফুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উলেখ্য, গত ৬ সেপ্টেম্বর ১১ জঙ্গির তালিকা প্রকাশ উপলক্ষে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান অভিযোগ করেন, তিন জঙ্গিকে বিভিন্ন সময়ে আটক করা হলেও পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি) বিরোধিতা না থাকায় আদালত তাদের জামিন দিয়েছেন। এ নিয়ে তিনি হতাশাও প্রকাশ করেন ওই সংবাদ সম্মেলনে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল গফুর বলেন, অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা আইনজীবী কাজী আবদুস শহীদ লাল তার বক্তব্যে বিচার বিভাগ নিয়ে যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের সংবাদ সম্মেলনে করা নেতিবাচক মন্তব্যের বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এসপি আনিসুর রহমান প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আসামি জামিনের বিষয়ে বিচারক ও পাবলিক প্রসিকিউটরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বিচারক ও পাবলিক প্রসিকিউটরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচার বিভাগকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
সভাপতির বক্তব্য শোনার পর বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার তাৎক্ষণিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানান। একইসঙ্গে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এসপির সংবাদ সম্মেলনে করা মন্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এটা তিনি করতে পারেন না।
সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত একাধিক আইনজীবী জানান, অনুষ্ঠানের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে ছিল যশোরের পুলিশ সুপারের নিয়ে সমালোচনা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বার কাউন্সিলের সদস্য সম রেজাউল করিম, গাজী নজিবুল্লাহ হিরু ও মোহাম্মদ ইয়াহিয়া এসপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, আসামি জামিন দেয়া, না দেয়া বিচারকের এখতিয়ার। এখানে প্রসিকিউটরের ভূমিকা মূখ্য নয়। ফলে বিচারক ও পাবলিক প্রসিকিউটরকে দোষারোপ করা পুলিশ সুপারের এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ।
নেতৃবৃন্দ আইনজীবীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ঢাকায় ফিরে তারা এ ব্যাপারে আলোচনা করবেন। এরপর হাইকোর্টে এসপির বিরুদ্ধে রিট দাখিল করবেন।
বিবার্তা/তুহিন/কাফী