বিবর্তন যশোর’র নতুন প্রযোজনা ‘মাতব্রিং’

বিবর্তন যশোর’র নতুন প্রযোজনা ‘মাতব্রিং’
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ২৩:২৬:৪৮
বিবর্তন যশোর’র নতুন প্রযোজনা ‘মাতব্রিং’
এইচ আর তুহিন, যশোর
প্রিন্ট অ-অ+
খুলনা বিভাগের ঐতিহ্যবাহী নাট্য সংগঠন বিবর্তন যশোর’র নতুন প্রযোজনা ‘মাতব্রিং’। এটি তাদের ১৪তম মঞ্চনাটক। যার প্রথম প্রদর্শনী হবে ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় যশোর শিল্পকলা একাডেমীতে। বিবর্তন যশোর ২৬ বছর ধরে সুনামের সাথে নাট্যচর্চা চালিয়ে যাচ্ছে। 
 
‘মাতব্রিং’ নাটকটি রচনা করেছেন সাধনা আহমেদ। নির্দেশনায় রয়েছেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ইউসুফ হাসান অর্ক। সঙ্গীত- ইউসুফ হাসান অর্ক, পোশাক- পরিকল্পনা আইরিন পারভীন লোপা, আলোক পরিকল্পনা- শাহীন রহমান, সেট পরিকল্পনা- ইউসুফ হাসান অর্ক ও কোরিওগ্রাফ করেছেন অদিতি সরকার রুমা।
 
বিবর্তন যশোরের সভাপতি সানোয়ার আলম খান জানান, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের আয়োজনে ঢাকা শিল্পকলা একাডেমি মঞ্চে জাতীয় নাট্যোৎসবে আগামী ৭ অক্টোবর, চুয়াডাঙ্গার অরিন্দম নাট্যেৎসবে ২৭ অক্টোবর, ২১ ডিসেম্বর ভারতের হালি শহরে মেয়র নাট্যেৎসবে, চন্দননগরে যুগের যাত্রী দুই বাংলার নাট্যোৎসবে ২ ফেব্রুয়ারি ও বহরামপুর শহরে ঋত্বিকের নাটোৎসবে মাতব্রিং নাটকটি মঞ্চস্থ হবে।  
 
মান্দি জনগোষ্ঠীর দুই নর-নারীর অনবদ্য প্রেম কাহিনী আশ্রয় করেই নাটকের গল্প এগিয়ে চলেছে। আদিবাসী মান্দিপল্লীর ভোজের উৎসব-নাচ-গান-আচার-বিশ্বাসসহ নানা উপকথা ঠাঁই পেয়েছে। জঙ্গল এখন আর ইচ্ছে মত ব্যবহার করা যায় না। জঙ্গলের মালিক সরকার। এই সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব বেশ-বসন ছেড়ে নগর জীবনে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।
 
নাট্য নির্দেশক ইউসুফ হাসান বলেন, নাটকের গল্পটা মান্দি জনগোষ্ঠী নিয়ে হলেও তাদের বাস্তুভিটা উচ্ছেদকে বৈষ্ণিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হয়েছে। সারা দুনিয়ার দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচারের চিত্রই এখানে চিত্রিত হয়েছে। নতুন অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে নির্দেশক ইউসুপ হাসান বলেন, ‘ঢাকার বাইরে এটিই আমার প্রথম কাজ।
 
বিবর্তনের কর্মীদের নাটকের প্রতি আবেগ ও মঞ্চের প্ররিশ্রয় আমাকে বিষ্মিত করেছে। ঢাকা প্রথম সারির কোন নাট্যদলের তুলনা বিবর্তন যশোর কোন দিক দিয়ে কম নয়।   
নাট্যকার সাধনা আহমেদ জানান, আমাদের বাড়িতে মাঝে মধ্যেই ‘শনি’ পূজা হতো। 
 
আমাদের মতো শরীয়তবাদী মুসলমান পরিবারে কেন বিষু উৎসব আর শনি পূজা হতো পরিবারের কারোর কাছে এর সঠিক ব্যাখ্যা পাইনি। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তিনি জানান, ‘তোমার বাড়ি যেহেতু কিশোরগঞ্জ জেলায় সেহেতু তোমাদের খুব কাছেই ‘গারো’ ‘হাজং’ অধ্যুষিত এলাকা। হতে পারে তোমার কোনো পূর্বপুরুষ আদিবাসী কোনো নারীকে বিয়ে করে এনেছিলেন। সেই নারীকে স্বাভাবিকভাবেই মোসলমানের ধর্ম পালন করতে হয়েছে কিন্তু নিজের সংস্কৃতির ধারাটি এ উৎসব পালনের মাধ্যমে তিনি ধরে রেখেছিলেন। 
বিবর্তন যশোর’র নতুন প্রযোজনা ‘মাতব্রিং’
এই ব্যাখ্যা আমার হৃদয়ে হাজার রঙের রামধনু ছুটিয়ে দিলো। কোন সে প্রাকৃত নারী! যার রক্তধারা বয়ে চলে আমার ধমনিতে? আমার দিনরাত গুনগুন করে তাঁরই সঙ্গীতে আমার বাতাস সুবাসিত হয় তাঁরই প্রাকৃতগন্ধে। সে নারী কি সমতলের কোনো যুবাকে ভালোবেসে এসেছিলো? নাকি ভূমি দখল করতে গিয়ে আমারই কোন পূর্বপুরুষ কোন এক প্রাকৃত নারীকে হরণ করে এনেছিলো? ‘মাতব্রিং’ নাটকটিতে সহজ করে ব্যক্তি ও গোষ্ঠী মানুষের সেই যন্ত্রণার কথাই বলেছি মান্দি চরিত্র গুলোর চলার চলনে, বলার বলনে। 
 
বিবার্তা/তুহিন/কাফী
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com