একটা সময় ছিল সব মানুষকে আপন মনে হতো, নিরাপদ মনে হতো। প্রকৃতপক্ষে চেনা-জানা মানুষের মধ্যে কেউ অনিরাপদ, ক্ষতিকর হতে পারে সেই ভাবনাটিই কখনো ছিল না।
সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞতা শেখালো পরিচিত মানুষমাত্রই আস্থাবান, নিরাপদ নয়। শিখলাম কেউ কেউ স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসে না, কেউবা খুব ভালোবেসে অনেক বড় ক্ষতিও করে ফেলতে পারে। আবার কেউ পাশে থাকতে চায় কেবল বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য।
আস্থাবান মানুষ ও পরিবেশ অনেক ছোট হতে থাকলো, সাবধানী আর হিসেবি হতে বাধ্য করতে থাকলো জীবন।
সেই 'কিছু অনিরাপদ আস্থাহীন মানুষ' এর গণ্ডিটা ক্রমশ এমন হতে থাকলো যে খুব যারা কাছের মানুষ তাদেরও আর আপন ভাবা যায় না। একটা প্রস্তুতি থাকে যেকোন সময় বিশ্বাস ভেঙ্গে পড়ার, আঘাত পাবার।
নিজেকে বুঝতে গিয়ে দেখি অনেক ভালোবাসে যে মানুষরা তাদের আমি ভালোবাসলেও আস্থা রাখতে পারি না কারো উপর। নিজের সংকীর্ণতায় লজ্জিত হই, কুঁকড়ে যাই। তাও ঠিক কাউকেই দূরবর্তী বা অদূরবর্তী ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ মনে হয় না।
কারো ভালোবাসা, স্নেহ, উপকার কৃতজ্ঞ করলেও আপ্লুত করে না। ভীত থাকি কখন না জানি কেমন বিকট রূপ মেলে ধরে কে নিজের!
অবিশ্বাসী সময়ের গোলমেলে মানুষ.....নাকি গোলমেলে সময়ের অবিশ্বাসী মানুষ বুঝি না! কিংবা এমনও হতে পারে এটিই জীবনের পরিপক্কতার ধর্ম। ঠিক যেসব কারণে মা-বাবা-পরিবার বুঝে উঠার সময় থেকেই আমাদের সাবধান আর সতর্ক হতে শেখায়। তাদের পরিপক্ক জীবন থেকে নেয়া শিক্ষাই হবে হয়তো তা!
জেনেছি, মানুষ বছরের পর বছর ধরে যে সম্পর্ক, বন্ধন যত্ন করে গড়ে তোলে তা মিলিয়ে যেতে সময় লাগে না খুব বেশি। সমস্ত আবেগ-ভালোবাসা-আপোষ মুছে যেতে সময় লাগে না! মহাকাল কিছুই মনে রাখে না। আর মানুষ! সে তো মহাকালের পথ চলায় সামান্য পদধূলির নাম মাত্র!
ফারজানা প্রিয়দর্শিনী আফরিনের ফেসবুক থেকে.....
বিবার্তা/পাভেল