ক্যাম্পাসের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সবচেয়ে কাছাকাছি শাহবাগ। কিন্তু সেই হলের শিক্ষার্থীদের শাহবাগে যাওয়া আসাতেই সবচেয়ে বেশি টাকা গুনতে হয়। আবার চরম ভোগান্তির শিকারও হতে হচ্ছে। ঝড়-বৃষ্টি, রৌদ্র বা যত দরকারেই হোক না কেন, কোনো রিক্সাওয়ালাই সাধারণত স্বেচ্ছায় আসতে চায় না।
শুধু বঙ্গবন্ধু হল নয়; কবি জসীম উদ্দীন হল, জিয়া হল, বিজয় একাত্তর হল, সূর্যসেন হল, মুহসীন হল, ইন্টারন্যাশনাল হল – এসব আবাসিক হলের (বিজনেস ফ্যাকাল্টিসহ) শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়।
কি হতে পারে এর সমাধান? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে চোখ পড়লো প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হল, জহুরুল হক হল, জগন্নাথ হল, এফ এইচ হলের দিকে । প্রত্যেকটি হলেরই আলাদা পকেট গেইট আছে।
কিন্তু বঙ্গবন্ধু হলের এখানে কোনো পকেট গেইট নেই, যেখান দিয়ে শ্রদ্ধেয়ভাজন প্রিয় শিক্ষকগণ, হলের শিক্ষার্থীরা, হল কর্মচারীরা যাওয়া আসা করতে পারবেন। ফলে বাধ্য হয়ে সাধারণত তাদের পায়ে হেঁটে বা বেশি প্রয়োজনে রিক্সায় যেতে হয়।
হলের পুরাতন স্টাফদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় বঙ্গবন্ধু হলের পেছন দিয়ে কাঁটাবনের দিকে একটি পকেট গেইট ছিল। সেই সময়ের একটি বিশেষ কারণে সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু এখন সেই সংস্কৃতি বদলে গেছে। আমার মনে হয়, সময় এসেছে পকেট গেইট খুলে দেবার। আর সেটার জন্য এখন সবচেয়ে উপযুক্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের দোকান বরাবর ওয়াল। গেইটটি আমাদের কেন্দ্রীয় লাইব্রেবির রাউন্ড গেটের মতো হতে পারে। যেখানে বিশেষ প্রহরী নিয়োগ দেয়া হতে পারে এবং নির্দিষ্ট সময় পরে গেইট বন্ধ হয়ে যাবে।
চলুন, শেষ দাবি জানানোর আগে একটি ঐকিক নিয়মের অংক করি। মনে করি, প্রতিদিন বঙ্গবন্ধু হল থেকে ২০০ জন শিক্ষার্থী শাহবাগের উদ্দেশ্যে রিক্সায় যাতায়াত করে। এরকম কবি জসীম উদ্দীন হল, জিয়া হল, বিজয় একাত্তর হল, সূর্যসেন হল, মুহসীন হল সহ মোট ৬ টি হলের কমপক্ষে ১২০০ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন ৪০ টাকা (যাওয়া ২০+ আসা ২০) করে খরচ করছে।
তাহলে
১ দিনে ১২০০ জন শিক্ষার্থীর খরচ ১২০০×৪০= ৪৮,০০০ আটচল্লিশ হাজার
১ মাস বা ৩০ দিনে খরচ ৪৮,০০০× ৩০= ১৪,৪০,০০০ চৌদ্দ লাখ চল্লিশ হাজার
১ বছর বা ১২ মাসে খরচ ১৪,৪০,০০০× ১২= ১,৭২,৮০,০০০ এক কোটি বাহাত্তর লাখ আশি হাজার টাকা।
প্রত্যেক হল থেকে যদি ২০০ না হয়ে ২৫০ জন বা ৩০০ জন + হয়। তবে খরচের অংকটা কত দাঁড়ায়?
এতো গেল শিক্ষার্থীদের হিসাব। আমাদের আবাসিক শিক্ষকগণ ও তাদের পরিবার, হল স্টাফ, ইন্টারন্যাশনাল হল, বিজনেস ফ্যাকাল্টি এর কথা বাদই দিলাম।
আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের প্রিয় শিক্ষকগণের চোখে হয়তো এ লেখা পড়বে। হয়তো বা পড়বে না। কিন্তু আপনাদের যাদের স্বদিচ্ছা আছে, তারা চাইলে দেখাতে পারেন। এটাও জানি এর পক্ষে বিপক্ষে অনেক যুক্তি আসবে। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন অনেক বেশি শক্তিশালী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা, সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন।
আমরা কি পারি না আমাদের শ্রদ্ধেয় উপাচার্য মহোদয়ের নিকটে স্মারকলিপি পেশ করতে? জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কবি জসীম উদ্দীন হল, জিয়া হল, বিজয় একাত্তর হল, সূর্যসেন হল, মুহসীন হল, ইন্টারন্যাশনাল হলের শিক্ষার্থীরা কি বলেন?
আলাল হোসেন আবীর এর ফেসবুক থেকে
বিবার্তা/জিয়া