বছর খানেক আগের কথা। আমি আমার অ্যাপার্টমেন্টে আমার এক ব্রিটিশ সহকর্মীকে ডিনারের আমন্ত্রণ করেছি। এই ধরনের ডিনার পার্টিগুলোতে আমরা মূলত জ্ঞান-বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করি খাবার টেবিলে বসে। তো, ওর সাথেও কথা হচ্ছিলো জ্ঞান-বিজ্ঞান নিয়েই। এখানকার লোকজন সবকিছু চামচ দিয়ে খায়।
তো কথা প্রসঙ্গে আমি আমি ওকে বলছিলাম,আমাদের দেশের লোকজন সব কিছু সরাসরি হাত দিয়ে ধরেই খায়। আমার নিজেরও চামচ দিয়ে খেলে মনে হয় কিছু খাইনি।
আমার সহকর্মী হেসে বলল, হ্যাঁ আমি জানি সেটা। এটা আসলে সভ্যতার একটা ধাপ। তোমরা আরও যত এগুবে; এই বিষয়গুলোও তত তোমাদের মাঝে চলে আসবে।
আমার এই ব্রিটিশ সহকর্মীর কথা শুনে খানিক কষ্ট পেয়েছিলাম। হাত দিয়ে খাওয়া অসভ্যতার লক্ষণ কেন হবে, আমি বুঝতে পারছিলাম না। অবশ্য সভ্যতা আর অসভ্যতার সংজ্ঞা তো ব্রিটিশরাই নির্ধারণ করে! ওরাই নাকি পুরো পৃথিবীর মানুষকে সভ্য করেছে!
গতকাল রাতে ইউরো ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের খেলায় ইংল্যান্ড আর রাশিয়ার খেলা ছিল। এই দুই দেশের সমর্থকরা কাল স্টেডিয়ামের ভেতরে রীতিমত মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে। প্রায় শ'খানেক আহত হয়েছে। এর মাঝে একজনের অবস্থা গুরুতর। এই দুই দেশের সমর্থকরা মদ খেয়ে মাতাল হয়ে একজন আরেকজনের উপর হামলে পড়েছে!
ইংল্যান্ডের এক সমর্থককে দেখলাম বলছে,আমরা আগেই বলেছিলাম রাত নয়টার সময় খেলা শুরু হওয়ার কোনো মানে নেই। এত দেরিতে খেলা শুরু হলে তো লোকজন এর আগে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে থাকবেই। আমরা তো সন্ধ্যা থেকে মদ খেতে শুরু করি!
এই হচ্ছে সভ্য ব্রিটিশদের অবস্থা! এদের ফুটবল সমর্থকরা আলাদাভাবে মারামারিতে পারদর্শী! এর আগেও ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আরেক ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে তারা একই কাজ করেছে!
ওরা স্টেডিয়ামের ভেতরে মদ খেয়ে মারামারি করে একজন আরেকজনকে মেরে ফেললেও এইসব তেমন কিছুই না। আর আমরা চামুচ দিয়ে ভাত না খেলে হয়ে যাই ‘অসভ্য’!
সভ্যতা, তুমি বড্ড বেশি মাতাল!
আমিনুল ইসলামের ফেসবুক থেকে…
বিবার্তা/নিশি