চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমরা ক'জন ষোলশহর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতাম। আমাদের বন্ধুরা মেইন স্টেশন থেকে আমাদের জন্য সিট দখল করে রাখতো এবং আমরা ট্রেনে উঠে তড়িঘড়ি করে বসে পড়তাম।
ট্রেন আসার আগ পর্যন্ত আমাদের গল্প চলতো। একদিন সকালে আমি আর আমার বান্ধবী পল্লবী গল্পে মগ্ন। হঠাৎ ট্রেন এসে থামলো। তখন সবার চোখ ট্রেনের দিকেই থাকে এবং সিট ধরার জন্য দৌঁড়াতে থাকে। আমিও আমার বান্ধবীর হাত ধরে দৌঁড়াতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু বান্ধবী কেমন যেন শক্ত হয়ে ‘এই, এই’ করে চিৎকার করছে। আমি ফিরে তাকালাম ওর দিকে। দেখলাম, আমি যাকে এতক্ষণ পল্লবী ভেবে হাত ধরে টানছি সে আসলে একটি অপরিচিত ছেলে।
পল্লবী আগেই ট্রেনে উঠে গেছে। ছেলেটি হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আমিও হাসছি। অতঃপর ‘সরি’ বলে ট্রেনে উঠে গেলাম আর পল্লবী হারামীকে খুঁজতে লাগলাম।
অপমানে আমার গা জ্বালা করছিল। ভাবছিলাম ক্যাম্পাসে গিয়ে পল্লবীর কানটা ধরব। ধরিনি, কারণ ও সবাইকে ঘটনাটা বলতো, ফাজিলের দল একটা উপন্যাস তৈরি করতো, আরেক ফাজিলের দল তা দিয়ে বাংলা সিনেমা বানাতো, ঐ ছেলেটাকে খোঁজা হতো।আর আমি হিট হয়ে যেতাম। দেশের কী দুর্দশা হতো।
আজ বন্ধু দিবসে ওই এক টুকরো স্মৃতি মনে করে আমার কেবলই হাসি পাচ্ছে ।
শংকরী, পল্লবী, পারভিন, সেলিম, জসীম, ফেরদৌসসহ অনেকের কথা মনে পড়ে। আমার বন্ধুরা এখন কে কোথায় আছে আমি জানি না। যেখানেই থেকো, ভালো থেকো বন্ধু।
আফরোজা খানমের ফেসবুক থেকে
বিবার্তা/মৌসুমী