আমি যেহেতু শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করি, তাই শরণার্থীদের ইন্টারভিউ নেয়া আমার নিয়মিত কাজ। গত বছর অক্টোবর মাসে এক পাকিস্তানী শরণার্থীর ইন্টারভিউ নিচ্ছিলাম; এই নিয়ে তখনও লিখেছিলাম। আজ আবার লিখলাম।
-তুমি পাকিস্তানের কোন অঞ্চল থেকে এসছো?
-কাশ্মীর থেকে?
-দেশ ছাড়তে হলো কেন?
-আমি কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করছিলাম, তাই দেশ ছাড়তে হয়েছে। তবে আমি এখান থেকেও কাজ করে যাচ্ছি।
-স্বাধীনতা চাইছো কেন?
-আমাদের সংস্কৃতি, আদব-কায়দা কোনো কিছুই পাকিস্তানের সাথে যায় না।
-দেশে ফিরবে কবে?
-যেদিন কাশ্মীর স্বাধীন হবে।
-তোমার কি মনে হয় কাশ্মীর একদিন স্বাধীন হবে?
-হ্যাঁ।
-কিভাবে?
-আমাদের শুধু একজন শেখ মুজিবুর রহমানের মতো নেতা দরকার। তাহলেই আমরা স্বাধীন হতে পারবো। তোমাকে জানিয়ে রাখি শুধু কাশ্মীর না, বেলুচিস্তানও স্বাধীন হতে চায়; ওরাও একজন শেখ মুজিবর রহমানের অপেক্ষায় আছে।
কোনো পাকিস্তানীর মুখ থেকে এ ধরনের কথা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। প্রচণ্ড অবাক হলেও ভাব করেছি আমি মোটেও অবাক হইনি; এটাই তো স্বাভাবিক!
আমি রাজনীতির মানুষ না। রাজনীতির মারপ্যাঁচ আমি বুঝি না। তবে এতটুকু বলতেই পারি- দেশ বিদেশের স্বাধীনতা প্রত্যাশী মানুষগুলো শেখ মুজিবুর রহমানের মতো নেতা খুঁজে বেড়াচ্ছে; আর স্বাধীন বাংলাদেশে একদল মানুষ এখনো তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ বলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। আরেকদল তো উনার মৃত্যু দিনে কেক কেটে মহানন্দে জন্মদিন পালন করে আসছে!
আজ আবার দেখলাম ডেইলি স্টার পত্রিকা পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পুরো এক পাতা জুড়ে পাকিস্তান দিবস পালন করছে! হতে পারে পাকিস্তানীরা টাকা দিয়েই এই এড দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের একটা জাতীয় পত্রিকার কি উচিত ছিলো, টাকার কাছে এভাবে বিক্রি হয়ে যাওয়া! ভাবছিলাম আমরা আসলে ঠিক কতোটা অকৃতজ্ঞ!
(কাশ্মীর সম্পর্কে আমার কোনো রকম আইডিয়া নেই, আমার জানা ছিল পাকিস্তানের কাশ্মীরের লোকজন স্বাধীনতা চায় না, পাকিস্তানের সাথেই থাকতে চায়। ভারতীয় অংশ স্বাধীন হতে চায়!)
আমিনুল ইসলামের ফেসবুক থেকে
বিবার্তা/মৌসুমী