‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) যে বিচারিক কার্যক্রম চলছে, ভারত তা সমর্থন করে। এই সমর্থনের পেছনে দায়িত্ববোধ ছাড়াও রয়েছে গভীর মমত্ববোধ।
১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে যে শিশুদেশটি জন্ম নিয়েছিল, সে জন্মে ভারতের ভূমিকা ছিল দক্ষ ধাত্রীর মতো। একজন ধাত্রী যেমন অত্যন্ত বিজ্ঞতায় একটি শিশুকে প্রসববেদনার্ত মায়ের জরায়ু চিরে নিয়ে আসেন পৃথিবীর আলোতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভেও ভারতের ভূমিকা ছিল সেই ধাত্রীর মতো।
একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত আক্রমণের শিকার হয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা তখন ভারত সরকার করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয়া ছাড়াও অস্ত্র ও গোলাবারুদের সরবরাহও তখন ভারত করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মিত্রদেশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে সব মিলিয়ে ভারতের তখন খরচ হয়েছিল প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। মিত্রবাহিনী হিসেবে মুক্তিবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়ে নিহত ও আহত হয়েছিল ভারতের হাজার হাজার সেনা।
ভারত ও বাংলাদেশের ‘মৈত্রী’ শুধু দু’টি প্রতিবেশী দেশ বা পারস্পরিক বাণিজ্যিক হিসাব-নিকাশের ওপর ভিত্তি করেই রচিত হয়নি। ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরের সময় এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে যদি সূর্য ওঠে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সে আলো ভারতে গিয়ে পৌঁছবে।’
তাঁর এই বক্তব্যের যৌক্তিকতাই স্পস্ট করে ভাতৃপ্রতীম দু’টি দেশের যৌথ প্রচেষ্টা ও নেতৃত্বকে, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার “সভ্যতার-সূর্য্য”-কে আরো অধিকতর উজ্জ্বল করে ছড়িয়ে দেবে সারাবিশ্বের প্রান্তরে।
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ফেসবুক থেকে
বিবার্তা/উজ্জ্বল/কাফী