২০০২ সালে ভারতের কলকাতার আমেরিকান সেন্টারে জঙ্গি হামলার ঘটনায় জড়িত অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ইমাম হাসানকে (৪৪) আটক করেছে গুজরাটের অপরাধ দমন শাখা বা এটিএস।
সোমবার এটিএস’র পুলিশ সুপার হিমাংশু শুক্লা জানান, ‘শনিবার রাতে বিহারের ঔরঙ্গাবাদ থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ইমামকে কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হবে।’
এটিএস জানায়, বিহারের গয়া জেলার বাসিন্দা ইমাম নাম পরিবর্তন করে ঔরঙ্গাবাদে একটি পোশাকের দোকান চালাতেন। আমেরিকান সেন্টারে হামলার মূলচক্রী আফতাব আনসারির ঘনিষ্ঠ ছিলেন ইমাম। জঙ্গিরা যে বাইকে চেপে এসে আমেরিকান সেন্টারে হামলা চালিয়েছিল ওই বাইকটির যোগান দিয়েছিলেন ইমাম। হামলার পরই বিহারের হাজারিবাগে গা ঢাকা দেন তিনি। হামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ রয়েছে আফতাব আনসারি ও ইমামের মামা জামালউদ্দিন নাসিরের ওপর।
এটিএস’র এক কর্মকর্তা জানান, ‘নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-জিহাদ-ই-ইসলামির (হুজি) অন্যতম সদস্য হল এই ইমাম। আরেকটি জঙ্গি সংগঠন জয়শ-ই-মোহাম্মদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ইমামের। এছাড়াও ‘আসিফ রাজা কমান্ডো ফোর্স’ (এআরসিএফ) নামে আরেকটি ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি।
২০০১ সালে গুজরাট পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আসিফ রাজার প্রতিশোধ নিতেই আসিফ রাজা কমান্ডো ফোর্স তৈরি করা হয়েছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল রাজকোট থানায় হামলা চালানো হয়। যদিও পরবর্তীতে তারা সেই পরিকল্পনা বাতিল করে।
গুজরাট পুলিশের এটিএস জানায়, ইমামের গোপন আস্তানার ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তাকে আটক করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সদর দফতর ভবানী ভবনেও হামলার ছক কষেছিল এআরসিএফ। যদিও নিরাপত্তার কথা ভেবেই সেই ছক বদলায় তারা। এরপরই আমেরিকান সেন্টারে হামলা চালায় এআরসিএফ সংগঠনটি।
২০০২ সালের ২২ জানুয়ারি সকালে কলকাতার আমেরিকান কালচারাল সেন্টারে জঙ্গিরা হামলা চালায়। শীতের সকালে জঙ্গিরা পুরো শরীর শালে ঢেকে মোটরসাইলে চেপে আমেরিকান সেন্টারে ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের দিকে জঙ্গিরা একে-৪৭ থেকে গুলি চালায়। হামলায় ছয় পুলিশকর্মী নিহত হয়, আহত হয় ১৪ জন।
ওই হামলার পরই দুইটি সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার করে। এর মধ্যে একটি হুজি, অন্যটি আসিফ রাজা কম্যান্ডো।
বিবার্তা/ডিডি/নিশি