দীর্ঘ দেড় যুগেও যশোরের দৈনিক রানার সম্পাদক আরএম সাইফুল আলম মুকুল হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়নি। এই দীর্ঘ সময়ে নানা জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে এ মামলার কার্যক্রম।
তবে অচিরেই এ মামলার রায় পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর রফিকুল ইসলাম পিটু। তিনি জানিয়েছেন, শিগগিরই এ মামলার আর্গুমেন্ট শুরু হবে। এরপরই রায়ের মাধ্যমে মামলা নিস্পত্তি হবে।
এ অবস্থার মধ্যদিয়ে আজ ৩০ আগস্ট বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে প্রেসক্লাব যশোর, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউজে), সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর ও যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন। কর্মসূচির মধ্যে শোকর্যালি, শহীদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল শহর থেকে বেজপাড়ার নিজ বাসভবনে যাওয়ার পথে চারখাম্বার মোড়ে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন। পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন কারো নাম উল্লেখ না করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোর জোনের তৎকালীন এএসপি দুলাল উদ্দিন আকন্দ ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এক পর্যায়ে আইনি জটিলতার কারণে মামলার কার্যক্রম থমকে পড়ে। আর এ কারণে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল করে দেয়া হয়।
দীর্ঘদিন পর ২০০৫ সালে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ থেকে মুকুল হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করে বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর সিআইডি কর্মকর্তা মওলা বক্স নতুন দু’জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দেন। ২০০৬ সালের ১৫ জুন যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল (৩) এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (২) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে মুকুল হত্যা মামলার চার্জগঠন করা হয়।
এ সময় মামলা থেকে তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম ও রূপম নামে আরেক আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১০ সালে মামলার ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে।
আদালত সূত্র জানায়, মুকুল হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আসামি ইত্তেফাকের সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন করেন। তিনি উচ্চ আদালতে যাওয়ায় ফের মুকুল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত ফারাজী আজমল হোসেনের অংশ বাদ রেখে ফের বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর রফিকুল ইসলাম পিটু জানান, মুকুল হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুতই মুকুল হত্যার বিচার পাওয়া যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিবার্তা/ইডি/ইফতি