ব্রিটেনে জিসিএসই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে বিগত বছরগুলির তুলনায় এবার পরীক্ষার্থীরা আশানুরুপ ফলাফল করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে বরাবরের মত এবারও বাংলাদেশী অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসসহ ব্রিটেনের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল করেছে।
এদিকে ২০০৮ সালের পর এবারের জিসিএসই পরীক্ষার ফলাফল সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এতে দেখা গেছে এ স্টার থেকে সি গ্রেডে ফলাফল পতন হয়েছে ৬৯% থেকে ৬৬.৯%। শুধু এ স্টার কমেছে ৬.৬% থেকে ৬.৫%।
এই ফলাফলের জন্য ইংরেজি ও গণিতের খারাপ ফলাফলকে দায়ী করছেন অনেকেই। তবে স্কুল মিনিস্টার নিক গিব বলেন, ১৭ বছর বয়সী যারা সফলভাবে জিসিএসই সম্পন্ন করেছে। তাদের আরো ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে।
২৫ আগস্ট টাওয়ার হ্যামলেটসসহ সারা দেশে একযোগে ঘোষণা করা হয় জিসিএসই রেজাল্ট। কৃতী শিক্ষার্থীদের সাফল্যে উল্লসিত নির্বাহী মেয়র ও কেবিনেট মেম্বররাও ল্যাংডন পার্ক স্কুলে গিয়েছিলেন ছাত্রছাত্রীদের অভিনন্দন জানাতে। ল্যাংডন পার্ক স্কুল থেকে এবার ১৬৬ জন জিসিএসই দিয়েছিলেন। তাদের অসাধারণ সাফল্যের কারণেই বারার মধ্যে বেস্ট পারফরমেন্স স্কুল হয়েছে ল্যাংডন পার্ক।
মেয়র বিগস বলেন, আজ যারা তাদের অনবদ্য রেজাল্ট হাতে পেয়ে উদযাপন করছেন, আমি তাদেরকে নিয়ে গর্ববোধ করি এবং ল্যাংডন পার্ক স্কুলে এসে কয়েকজন কৃতী শিক্ষার্থীর সাথে ব্যক্তিগতভাবে মিলিত হতে পেরে আমি খুবই সন্তুষ্ট। শিক্ষা বিষয়ক কেবিনেট মেম্বার ও ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর র্যা চেল স্যান্ডার্স জিসিএসই তে অনন্য সাফল্য অর্জনকারী সকল শিক্ষার্থী, তাদের শিক্ষক ও অভিভাবকদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ভালো শিক্ষা আমাদের শিক্ষার্থীদের তাদের পছন্দ অনুযায়ী কেরিয়ার গড়তে সাহায্য করবে।
ল্যাংডন পার্ক স্কুলের হেডটিচার রিচার্ড ফিৎজেরাল্ড বলেন, গত কয়েক বছরে আমাদের শিক্ষার্থীরা অব্যাহতভাবে যে সাফল্য অর্জন করে আসছে, তাতে আমরা তাদেরকে নিয়ে খুবই গর্বিত। এই সাফল্যের পেছনে যেমন অনেক ধরনের পরিবর্তন এবং সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীর কঠোর পরিশ্রম থাকলেও মূলত ছাত্রছাত্রীদের ভালো রেজাল্ট করার অঙ্গীকার, দৃঢ়তা, এবং তাদের পরিবারগুলোর সম্পৃক্তার ফলেই আজ আমরা এই অসাধারণ সাফল্য উদযাপন করছি।
এই স্কুলের কৃতী শিক্ষার্থী ফারিদাত আব্দুলসালামি ৮টি এ স্টার ও ২টি এ পেয়েছেন। তাঁর প্রতিক্রিয়া হলো এমন, ‘আমি সত্যিই খুব আনন্দিত। আমি মেডিসিন নিয়ে কিছু করতে চাই, তাই এ লেভেলে ম্যাথস এবং সায়েন্স নিবো।’
শাহ আহমেদ ৯টি এ স্টার ও ২টি এ পেয়েছেন। তিনি বলেন, আমি খুব খুশি এবং এখন স্বস্তিবোধ করছি, কারণ এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কোন কাজ যা আমার জীবনে প্রথম করলাম। এ লেভেল করবো, ডিগ্রি অর্জন করবো, কিন্তু এরপর আমি কী করবো তা এখনো জানি না।
৩ এ স্টার, ৪ এ ও ৪ বি গ্রেড লাভকারী নিনা লাই বলেন, আমি ল্যাংডন পার্ক স্কুলেই এ লেভেল করবো এবং পরে আইন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে ইউনিভার্সিটিতে যাবো। ৯টি এ - সি গ্রেড লাভকারী কৃতী শিক্ষার্থী শাজিয়া বারী সাইকোলোজি নিয়ে উচ্চচতর শিক্ষা লাভে আগ্রহী। ল্যাংডন পার্কে অধ্যয়ন করতে পেরে তিনি খুবই আনন্দিত বলে জানান।
উল্লেখ্য, গত বছর ল্যাংডন পার্ক স্কুলের ৬২ শতাংশ শিক্ষার্থী জিসিএসইতে ৫ বা তারও বেশি এ স্টার থেকে সি গ্রেড (ইংলিশ ও ম্যাথস সহ) লাভ করেন, যা এর আগের বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি।
স্কুলের এবারের ফলাফলের প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে এবার ইংরেজিতে এ থেকে সি গ্রেড লাভকারীর সংখ্যা ৮৮ শতাংশেরও বেশি, যা জাতীয় গড় ছাড়িয়ে গেছে। বিজ্ঞান বিভাগেও অগ্রগতির হার আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি।
বিবার্তা/জিয়া