যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এবার ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশী নারীকে খুন করা হয়েছে। ইমামসহ দুজনকে গুলি চালিয়ে হত্যার মাস না পেরুতেই এ ঘটনা ঘটলো।
নিহত নাজমা খানম ঝর্না (৬০) কুইন্সের জ্যামাইকা হিলস এলাকায় থাকতেন। বুধবার রাতে (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল) তিনি ‘ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক’ হামলার শিকার হন বলে স্বজনদের ধারণা।
রাত ৯টার দিকে বাড়ির সামনেই নরম্যাল রোডে নাজমা দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হন বলে পুলিশ ও তার স্বজনরা জানিয়েছে।
তিন সন্তানের মা নাজমার এক সন্তান নিউ ইয়র্কে থাকেন। অন্য দুই ছেলে-মেয়ে থাকেন বাংলাদেশে। শরীয়তপুর জেলার বাসিন্দা নাজমা বাংলাদেশে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।নাজমার বোনের ছেলে মোহাম্মদ কবির নিউ ইয়র্ক মুসলিম পুলিশ অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য।
পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় কাছেই ছিলেন নাজমার স্বামী শামসুল হক। স্ত্রীর চিৎকারে তিনি এগিয়ে আসার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে নাজমাকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।
নাজমার ভাই বাংলাদেশে থাকা আলতাফ হোসেন ভগ্নিপতিকে উদ্ধৃত করে বলেন, তার বোন এবং ভগ্নিপতি কেনাকাটার জন্য বাসার বাইরে গিয়েছিলেন। ফেরার সময় বাসার কাছাকাছি আসার আগে তার বোন কিছুটা এগিয়ে যান। এরই মধ্যে বোনের চিৎকার শুনে ভগ্নিপতি তাকিয়ে দেখেন, ২/৩জন দুর্বৃত্ত বড় ধরনের চাকু দিয়ে নাজমার বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাচ্ছে।
নিউ ইয়র্ক পুলিশের পক্ষ থেকে ঘাতককে গ্রেপ্তারে সহায়তা চেয়ে কোনো তথ্য থাকলে তা ১-৮০০-৫৭৭-৮৪৭৭ নম্বরে ফোন করে জানাতে বলা হয়েছে।
প্রায় ১০ বছর আগে ডিভি লটারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পাড়ি জমিয়েছিলেন শরীয়তপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাজমা। তার স্বামীও শরীয়তপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক ছিলেন। সেখানে গিয়ে তারা ব্যবসা করছিলেন বলে জানান আলতাফ।
গত ১৩ অগাস্ট কুইন্সের ওজন পার্কে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় বাংলাদেশী ইমাম মাওলানা আলাউদ্দিন আকঞ্জি (৫৫) এবং তার সাথী থারা মিয়াকে (৬৪)। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে অস্কার মরেল (৩৫) নামের স্পেনিশভাষীকে।
১৭ দিনের ব্যবধানে আরেক বাংলাদেশি পথে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় কুইন্সের জ্যামাইকা এবং ওজনপার্ক এলাকায় বসবাসরত লক্ষাধিক বাংলাদেশীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
বিবার্তা/রোকন/কাফী